অকার্যকর হয়ে পড়া ইরান পারমাণবিক চুক্তি নবায়ন নিয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। মস্কোয় গত মঙ্গলবার রুশ ও ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ রকম ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে আমাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা ইরান-রাশিয়ার বাণিজ্যিক ও অন্য ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। ওয়াশিংটন এ বিষয়ে আমাদের লিখিত নিশ্চয়তা দিয়েছে। অন্যদিকে ইরান পারমাণবিক চুক্তিকে রাশিয়া বানচালের চেষ্টা করছে বলে যে প্রচারণা শুরু হয়েছে, তা ভিত্তিহীন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসাইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, ‘ইউক্রেন পরিস্থিতি ও ইরান পারমাণবিক চুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কিছু বিষয় ছাড়া, চুক্তির খসড়া প্রায় প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কিছু দাবি উত্থাপন করছে, যা আমাদের “রেড লাইনের” সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এগুলো মীমাংসা করা গেলে যেকোনো সময় চুক্তি হতে পারে।’ ইরান পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে শুরু থেকে রাশিয়া ইরানের পক্ষ হয়ে কাজ করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ‘জয়েন্ট কমম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) করে ইরান। ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা বেরিয়ে গেলে তা একধরনের অকার্যকর হয়ে পড়ে। বাইডেন প্রশাসন তা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে।
গত ১১ মাসে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এ নিয়ে ৮ দফায় অনেকগুলো বৈঠক হয়েছে। অধিকাংশ বিষয়ে পক্ষগুলো এক মত হয়েছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ মুহূর্তে চুক্তিটিকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
কারণ, গত সপ্তাহে রাশিয়ার পক্ষ থেকে নিজেদের কিছু উদ্বেগের কথা জানানো হয়। ইউক্রেনকেন্দ্রিক নিষেধাজ্ঞা ইরান পর্যন্ত টেনে না আনতে যুক্তরাষ্ট্রের লিখিত নিশ্চয়তা দাবি করে মস্কো। শুরুতে গড়িমসি করলেও শেষ পর্যন্ত তা মীমাংসা হলো। এখন ইরানের রেড লাইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবুজসংকেত পাওয়া গেলেই চুক্তির দিনক্ষণের ঘোষণা আসতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক অনলাইন গণমাধ্যম আল-মনিটরের এক প্রতিবেদনে।