বগুড়া-সারিয়াকান্দি রোডে ঈদুল আজহার অজুহাত দিয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। প্রতিবার ঈদের আগে ও পরে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। চালকেরা বলছেন, সারিয়াকান্দি থেকে বগুড়া যেতে হলে কয়েকবার তাঁরা চাঁদা দেন। আবার সারিয়াকান্দিতেও ফেরার পথে চাঁদা দিতে হয় তাঁদের। এ কারণে বাড়তি ভাড়া নেন তাঁরা। এদিকে, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে। যাত্রীরাও নিরুপায় হয়ে সেই ভাড়া পরিশোধ করছেন।
বগুড়া-সারিয়াকান্দি রাস্তার দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। জানা গেছে, ১২ বছর আগে এই ২০ কিলোমিটার রাস্তার অটোরিকশা ভাড়া ছিল ২০ টাকা। বিভিন্ন ঈদে এ ভাড়া বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৪০ টাকা, যা দীর্ঘদিন ছিল। সর্বশেষ করোনার দোহাই দিয়ে এই ৪০ টাকার ভাড়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫০ টাকা। ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই ভাড়া ৭০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন অটোরিকশা চালকেরা।
গত বুধবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যাত্রীপ্রতি ভাড়া ৭০ টাকা করে আদায় করেছেন চালকেরা। রাত ৯টা থেকে বাড়তে থাকে ভাড়া। এটি বেড়ে রাত ১২টা পর্যন্ত ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়। রাত ১২টার পর যা বৃদ্ধি পেয়ে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত ২০০ টাকায় গিয়ে পৌঁছায়। ঈদের আগে ও পরে কয়েক দিন এ ভাড়া বাড়তেই থাকে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের আবু হানিফ মিয়া জানান, তিনি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ঢাকা থেকে বগুড়ার বাসায় এসেছেন। রাত ১২টার দিকে তিনি বগুড়া থেকে অটোরিকশা করে ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে সারিয়াকান্দি এসেছেন।
উপজেলার হাটশেরপুর ইউপির হাসনাপাড়া গ্রামের শাকিল মিয়া বলেন, ‘জ্যামে আটকা পড়ে ঢাকা থেকে বগুড়ায় পৌঁছতে রাত ২টা বেজে যায়। পরে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে আমরা বগুড়া হতে সারিয়াকান্দি এসেছি। প্রতিবার ঈদের সময় বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়।’
অটোরিকশার চালক বেলাল মিয়া বলেন, ‘যেসব চালক রাতে অটোরিকশা চালান তাঁরা এ কাজটি করেন। তবে আমাদের অটোরিকশা ভাড়া বৃদ্ধির মূল কারণ হলো রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি। সারিয়াকান্দি থেকে বগুড়া যেতে সারিয়াকান্দি স্ট্যান্ডে একবার, আবার বাঙ্গালী ব্রিজের পশ্চিম পাশে ঘাটপার নামক স্থানে দ্বিতীয়বার চাঁদা দিতে হয়। আবার বগুড়া থেকে সারিয়াকান্দি আসতেও দুবার চাঁদা দিতে হয়।’
সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, কিছু অসাধু অটোরিকশার চালক বিভিন্ন অজুহাতে বাড়তি ভাড়া নিয়ে থাকেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হবে।
ইউএনও মোহম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বেশি ভাড়া নেওয়া অসাধু অটোরিকশার চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।