লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অঞ্চল রামগতি উপজেলায় এ বছর রোপা আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এমন ফলনে কৃষকের মুখে দেখা মিলেছে হাসি।
এ ছাড়া বেশির ভাগ জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে। তাই কৃষকেরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কৃষাণীরা উঠানে ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত।
এ বছর প্রতি কেজি ২৭ টাকা দামে প্রতি মণ ১ হাজার ৮০ টাকায় কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হবে। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ২ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর।
উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, যেদিকেই চোখ যায়, সেদিকেই পাকা ধানের দেখা মেলে। বিশেষ করে উপজেলার চর আফজল, টুমচর, দক্ষিণ টুমচর, চর রমিজ, চর আবদুল্যাতে রোপা আমনের ফলন বেশি হয়েছে। উঠানে ছড়িয়ে আছে সোনালি সোনা। তাঁদের চোখে-মুখে দেখা যাচ্ছে ধানের সোনালি আভা।
এ ছাড়া প্রতিটি গ্রামে এখন হেমন্তের ছোঁয়া। পাকা ধান হেমন্তকে আরও রাঙিয়ে দিয়েছে। আবার এ অঞ্চলের কৃষকের পাশাপাশি মাঠ থেকে ফসল কেটে সেদ্ধ ও শুকিয়ে গোলায় মজুত করতে ব্যস্ত কৃষাণীরাও। নতুন ধানের রং-বেরঙের পিঠা-পুলি তৈরি করছেন তাঁরা।
এদিকে স্থানীয় কৃষকেরা আমনের ভালো ফলনে বেশ খুশি। তাঁরা বলেন, ‘রোপা আমনের এমন বাম্পার ফলনে আমরা খুশি। তবে ফসলের উপযুক্ত মূল্য না পেলে আগ্রহ হারাবেন কৃষক পরিবার। বিগত সময়ে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও আমরা তা বিক্রি করে উপযুক্ত মূল্য পাইনি।
তাই স্থিতিশীল বাজার ও ন্যায্যমূল্য পাওয়ার দাবি জানাই। তবে উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকেরা আশাবাদী, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এ বছর ন্যায্যমূল্য ও স্থিতিশীল বাজার পাব।’
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর। তালিকাভুক্ত কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এ ছাড়াও দেশের সবচেয়ে বেশি সয়াবিন এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়ে থাকে। এ বছর রোপা আমনের আবাদি জমির পরিমাণ ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। রোপা আমনের ফসলি জমিতে ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হেক্টর জমি।
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, কৃষকেরা কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার সঠিক সময়ে কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। ফলে রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। অল্প কিছু জমিতে ছত্রাক আক্রান্ত করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, এ বছর ২৭ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ ১ হাজার ৮০ টাকায় কৃষক থেকে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ২ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর। একজন কৃষক থেকে সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া প্রকৃত কৃষক যাতে বঞ্চিত না হন, সেদিকে নজরদারি করবে প্রশাসন। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে।