ঝগড়া হয়েছিল শিশু রাহুলের মায়ের সঙ্গে। এর জেরে লাশ হতে হলো তিন বছরের রাহুলকে। প্রতিবেশী এক নারী রাহুলকে হত্যা করে একটি স্যুটকেসের মধ্যে ভরে খাটের নিচে রেখে দেন।
লাশ পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হলে গত সোমবার ভোরে বাঁশঝাড়ের মধ্যে ফেলে দেন ওই নারী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছেন পূর্বতী রানী দাস (৩২)। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শামারচর (খাসিয়াহাটি) গ্রামের দীগেন্দ্র দাসের স্ত্রী।
রাহুল দাস হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের রুবেল দাসের ছেলে। গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে নগরীর কালিবাড়ি সবুজবাগ আবাসিক এলাকার এ-ব্লকে বাবুল দেবের কলোনির পাশের বাঁশঝাড় থেকে রাহুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের এক ঘণ্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে জালালাবাদ থানা-পুলিশ। পরে উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডের পর লাশ গুম করে রাখায় ব্যবহৃত স্যুটকেসসহ বেশ কয়েকটি আলামত।
এ ঘটনায় রাহুলের বাবা বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শিশু রাহুলের ঘাতক পূর্বতী রানী দাসকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে, কালিবাড়ি এলাকার বাবুল দেবের কলোনিতেই আলাদা দুটি কক্ষে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন পূর্বতী দাস ও রাহুলের মা রুমা দাস। দুদিন আগে রাহুল দাসের মা রুমা দাসের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝগড়া হয় প্রতিবেশী পূর্বতী দাসের। এই ঝগড়ার জেদে রুমা দাসের সন্তানকে বাসায় ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন পূর্বতী দাস।
তিনি আরও জানান, শিশুটিকে গত শনিবার দুপুর একটায় শ্বাসরোধে হত্যা করে একটি স্যুটকেসের মধ্যে ভরে খাটের নিচে রেখে দেন পূর্বতী দাস। তবে লাশ পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হলে গত সোমবার ভোরে কলোনির পাশে বাঁশঝাড়ের মধ্যে ফেলে দেন তিনি। গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে এক প্রতিবেশী বাঁশঝাড়ের পাশে প্রস্রাব করতে গেলে শিশুটির লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে জালালাবাদ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
ওসি আরও বলেন, ‘উদ্ধার করা আলামত ও পুলিশের হাতে থাকা তথ্য প্রমাণে আমরা নিশ্চিত পূর্বতীই এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।’
রাহুল দাসের বাবা রুবেল দাস বলেন, ‘গত শনিবার দুপুর থেকে রাহুল নিখোঁজ ছিল। এরপর থেকে আশপাশ এলাকায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। ওই দিনই এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। নিখোঁজের দুদিন পর গত সোমবার লাশ পাই। আমার ছেলেকে যে খুন করেছে তার ফাঁসি চাই।’