মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রভাবশালী দুটি পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ হয়েছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গতকাল শনিবার আপাং কাজির পক্ষ এবং কবির খান পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের প্রভাবশালী পক্ষ দুটির বিরোধে মিরাজ হোসেন নামে এক যুবকের পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর সূত্র ধরেই শনিবার সকাল ৭টার দিকে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ব্যাপক গোলাগুলিসহ প্রায় অর্ধশত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকাতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আহমেদ রাসেল বলেন, ‘গত ৩০ জুলাই কালকিনি উপজেলায় পূর্ব এনায়েতনগর এলাকায় ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মিরাজ হোসেনের পা বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায় আপাং কাজীর লোকজন। পরে মিরাজের ভাই কবির খাঁ বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন। এতে আপাং কাজীসহ ৩৫ জনের নামে মামলা করা হয়। মামলার আসামিদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।’
ওসি আরও জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে কালকিনি থানা-পুলিশ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পা কাটা মামলার বাদীর চাচা তিতাই খানের ছেলে লিয়াকত খানের দুই পা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে দেন আসামিরা। পরে স্থানীয় লোকজন আহত কৃষককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই উভয় পক্ষের লোকজনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার সকাল থেকে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গোলাগুলিসহ বোমা বিস্ফোরণ হওয়ায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। পলে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে দুই পক্ষের নেতা আপাং কাজী ও কবির খানকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা, ঘটর পর থেকে তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
কালকিনি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আনিকা তাছনিম বলেন, ‘আমাদের এখানে স্থানীয় মেরাজুল কাজী (১৯), শহিদুল কাজী (৩৫), জাহাঙ্গীর কাজী (৬৫), শামীম (৩০), সারমিনসহ (২৬) প্রায় ১০ জন লোক প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। তাঁদের মধ্যে মেরাজুল কাজী, শহিদুল কাজী ও জাহাঙ্গীর কাজীর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, ‘পেছনের একটি ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রেখেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এখনো কেউ মামলা দেননি। পুলিশ পুরোনো মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’