বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত ফুল্লশ্রী গ্রামে ‘বাংলার তাজমহল’ হিসেবে পরিচিত পুরাকীর্তিটি ধ্বংসের পথে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারা এ স্থাপত্যের নানা অলংকরণ ভেঙে ফেলে। এ ছাড়াও নির্মাণের পর থেকে সংস্কার না হওয়াতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এটি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে স্থাপনাটি সংস্কারের মাধ্যমে আরও দৃষ্টিনন্দন করার দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও পর্যটকেরা।
জানা যায়, এটি একটি সমাধি মন্দির। শুরুতে নাম ছিল কালীতারা নিত্যানন্দ স্মৃতিমন্দির। আগ্রার তাজমহলের আদলে ছোট পরিসরে উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামে পারিবারিকভাবে এটি নির্মিত। আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়ক থেকে তাজমহল পর্যন্ত ইট সলিংয়ের রাস্তাটি ভেঙে একাকার হয়ে গেলেও তা সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অতীতে প্রতিবছর তাজমহলের পাশে মেলার আয়োজন করা হলেও পাঁচ বছর ধরে তা বন্ধ।
আগৈলঝাড়ার ‘তাজমহল’ সম্পর্কে বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস বলেন, বাংলা ১৩৪৭ সালে জমিদার কামিনী গুপ্তের মেজ ছেলে ডা. শরৎ চন্দ্র গুপ্ত বাড়ির পুকুরপাড়ে এটি নির্মাণ করেন। সাতটি মূল স্তম্ভের ওপর বর্গাকার সমাধি মন্দিরের নামকরণ করা হয় কালীতারা নিত্যানন্দ স্মৃতিমন্দির। নিপুণ নির্মাণশৈলীর কারণে এ অঞ্চলের মানুষ ওই স্মৃতি মন্দিরটিকে ‘তাজমহল’ নামেই আখ্যায়িত করেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, এর পশ্চিম পাশে জ্যোতি কালী মোহন দাশগুপ্ত, উত্তরে সত্যভামা গুপ্তের সমাধি রয়েছে।
সূত্রমতে, ২০০৫ সালে স্থানীয়রা তাজমহলের মধ্যে বরজের মালামাল রাখলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আগুন ধরিয়ে দিলে স্থাপনাটির অনেক ক্ষতি হয়। সমাধির অনেক সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে ভোগদখল করা হচ্ছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘আগৈলঝাড়ার তাজমহলখ্যাত স্থাপনাটি সংস্কার ও সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চাওয়া হবে।’