যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রামের তারকা মসজিদটি বিলীন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে সম্পূর্ণ মসজিদটি বিলীন হয় যমুনায়। এর আগে গত সোমবার সকালে মসজিদটির একাংশ যমুনায় ধসে পড়ে। সে সময় চোখের সামনে মসজিদ বিলীন হতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন এলাকাবাসী।
এদিকে, মসজিদটি বিলীনের পাশাপাশি গতকাল আরও তিনটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়।
এদিকে, একই সঙ্গে বাড়ছে নদী ভাঙন। ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডও। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যা মঙ্গলবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় পানির বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার।
এদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে জেলার এনায়েতপুর ও চৌহালীতে ভাঙন বাড়ছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। ভাঙনকবলিত মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে। ভাঙন থেকে রক্ষায় অনেকে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। কেটে ফেলা হচ্ছে গাছপালা। চৌহালীতেও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ বিষয়ে স্থানীয় কামাল হোসেন বলেন, গত কয়েক দিন হলো যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় শুরু হয় নদীভাঙন। মুহূর্তে নদীতে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি। নদীতে ভেসে গেছে গবাদিপশু। নিঃস্ব হচ্ছে এই এলাকার মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে মসজিদসহ বাড়িঘর রক্ষা পেত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, উজানের ঢল ও টানা বর্ষণের প্রভাবে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নদীতীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।