কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বিনা ধান-২৫ চাষ করে চমকে যাওয়ার মতো ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। গত বছর উপজেলাটিতে আধা হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলক এই জাতের ধান আবাদ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছিলেন কৃষকেরা। তাঁদের দেখাদেখি এবার বোরো মৌসুমে ১৪৪ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতটি চাষ করা হয়।
কৃষকেরা বলছেন, তাঁরা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফলনও পেয়েছেন। কৃষকেরা জানান, বিনা ধান-২৫-এর বীজ বপন থেকে শুরু করে ১৩৫ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন তাঁরা। গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ৫০ টন হয়েছে। তাঁরা এ বছর বিনা ধান-২৫ চাষাবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন।
নতুন উদ্ভাবিত বোরো জাতের এই ধানের চালে ভাত অনেক চিকন এবং সুগন্ধি হওয়ায় মিনিকেট ও বাসমতী চালের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলেও জানিয়েছে কৃষি কার্যালয়।
জানা গেছে, গত বছর উপজেলা সদর ইউনিয়নের নাইঘর ও সাহেবাবাদ এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে আধা হেক্টর জমিতে বিনা ধান-২৫ চাষাবাদ করা হয়। সে সময় ভালো ফলন এবং স্বল্প জীবনকাল দেখে উপজেলার কৃষকেরা এই ধান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এবার বোরো মৌসুমে উপজেলার ১৪৪ হেক্টর জমিতে এর চাষ করা হয়। ফলন দেখে চমকে যান সবাই।
উপজেলার নাইঘর গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, অন্যান্য জাতের তুলনায় এতে শিষপ্রতি ধানের পরিমাণও বেশি। চিটা এবং নষ্ট বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ২২-২৫ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে।
রেহেনা বেগম নামের একজন ৩৩ শতক জমিতে এ জাতের ধান চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম এ ধানের চাষ করে খুবই চিন্তায় ছিলাম। এখন দেখি অনেক ভালো ফলন হয়েছে। ধানটা অনেক চিকন, খেতে ভালো হলে এরপর থেকে এটি বেশি বেশি চাষ করব। আমাদের চাষ দেখে অন্য কৃষকেরাও উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। শুনেছি আগামী বোরো মৌসুমে তাঁরাও নাকি এই ধান চাষ করবেন।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, এই জাত গত বছর বোরো মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র আধা হেক্টরে চাষ করা হয় এবং বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। এই মৌসুমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের পরামর্শে উপজেলার কৃষকেরা ১৪৪ হেক্টরে বিনা-২৫ আবাদ করেন।