যশোরের চৌগাছায় বোরো বীজ ধানের দাম এক দিনে চার গুণ বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকেরা।
তাঁরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা তিন দিন বর্ষণে এলাকার অধিকাংশ বোরো বীজতলায় পনি জমে নষ্ট হয়ে গেছে।
ফলে নতুন করে বীজতলা করার জন্য বীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা। আর এরই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাম চার গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন বীজ ব্যবসায়ীরা।
গত সোমবার বিকেল থেকে বর্ষণ একটু কমলেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে চাষিরা চৌগাছা শহরে বীজের দোকানে ভিড় করতে থাকেন। চাহিদা বেশি দেখে ব্যবসায়ীরা কিছুক্ষণ পর পর বীজের দাম বাড়িয়ে দিতে থাকেন।
গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপাড়া গ্রামের চুন্নু মিয়া বলেন, ‘প্রথম দিকে বিভিন্ন জাতের শুভলতা ও স্বর্ণ ধানের বীজের দাম ছিল প্রতিকেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সেই বীজ আজ (মঙ্গলবার) কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা করে কেজি।’
পেটভরা গ্রামের জাকির হোসেন ১৮ কেজি শরু জাতের ধানের পাতো (বীজতলা) করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘বীজতলা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। বাড়ির বীজ ছিল। তখন বাজারে দাম কেজিপ্রতি ৭০ টাকার বেশি ছিল না। এখন বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে। যার দাম প্রতিকেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা নিচ্ছে।’
বড়খানপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘দোকানিরা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বোরো বীজ ধানের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আমি শহরের আলিয়া মাদ্রাসার সড়কে বীজের দোকানে যখন ঢুকি তখন তাঁরা ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছিলেন। দোকানে ভিড় থাকায় কিছুক্ষণ পরে সেই ধান বীজের দাম চাইলেন ১৫০ টাকা কেজি।’
উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের ফশিউজ্জামান বলেন, ‘আমি বাসমতি ধানের বীজ এক কেজির প্যাকেট কিনেছিলাম ১৯০ টাকা করে। গতকালও বাজারে এই দামই ছিল। আজ সে বীজের দাম ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা চাচ্ছেন দোকানিরা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী দাম বেশির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অন্যদের মতো আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।’
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেণ বিশ্বাস বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বোরোর বীজতলা ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের নতুন করে ধান বীজ কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে বিএডিসি বা বীজ ফার্মেও ধান বীজের মজুত নেই।’
সমরেণ বিশ্বাস বলেন, ‘বীজতলা নষ্টের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বসায়ীরা হয়তো বীজ ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এটা দেখার দায়িত্ব জেলা বাজার নিয়ন্ত্র কর্মকর্তার।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে কৃষদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে এটি জানানো হবে।’