বান্দরবানের থানচি উপজেলার মেনরোয়া পাড়া-হৈটংপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বান্দরবান-থানচি প্রধান সড়কের পাশেই এর অবস্থান। শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। একটিমাত্র কক্ষে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হয় প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। আছে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীও। শিক্ষকও মাত্র একজন। শিক্ষকের জন্যও নেই আলাদা কোনো কক্ষ। গত চার বছর ধরে এভাবেই চলছে। বেসরকারিভাবে পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে একজন শিক্ষকের বেতন বাবদ মাসিক ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয়, নেই অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে মোট ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে। বিদ্যালয়টি পাকা ভবন হলেও, ছাউনি টিনের। মাত্র একটি কক্ষ। এখানেই পাঠদান চলে। দাপ্তরিক কাজ চলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা দহাইনু মারমার বাড়িতে।
দহাইনু মারমা জানান, বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনের মতো ছাত্রছাত্রী রয়েছে। সবাই একটি কক্ষেই পাশাপাশি বসে লেখাপড়া করে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে কথা হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক দহাইনু মারমার সঙ্গে। তিনি জানান, ২০১৯ সালে বেসরকারি উদ্যোগে মেনরোয়া পাড়ায় বিদ্যালয়টি গড়ে তোলা হয়। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে আধা পাকা ভবনটি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। আসবাবও ওই প্রকল্প থেকেই দেওয়া হয়। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে শিক্ষকের বেতন হিসেবে মাসে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। আর কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।
স্থানীয় সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘বিদ্যালয়টি অনেকটা অযত্ন, অবহেলায় রয়েছে। মাত্র একটি কক্ষ, সেখানেই ছয়টি শ্রেণির লেখাপড়া, এটা ভাবতেও কষ্ট লাগে।’
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে ওই বিদ্যালয়ের জন্য একজন শিক্ষক রাখা হয়, তাঁকে মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়।’
সরেজমিন গেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, কক্ষ সংকটে তাদের কষ্ট করতে হয়। আশপাশে আর কোনো বিদ্যালয়ও নেই। সব শ্রেণির ছাত্রছাত্রী একই কক্ষে লেখাপড়া করতে গিয়ে সমস্যা হয়। শিক্ষক ও কক্ষ সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানায় তারা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অংপ্রু ম্রো বলেন, ‘বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলে পিছিয়ে পড়া এলাকার শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নিজাম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তালিকায় নেই, থাকলে অবশ্যই তদারকির সুযোগ থাকত। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।