নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
হিমালয়ের সুউচ্চ কাঞ্চনজঙ্ঘা। ওপরে নীল আকাশ। নিচে শুভ্র বরফ সূর্যের কিরণ লেগে ঝলমল করছে। সেই রোদে দাঁড়িয়ে দুই পর্বতারোহী। সুলুখুম্বু ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি তাঁবু। তাতে আছেন কিছু পর্বতারোহী। হিডেন ভ্যালির ওপর দিয়ে উঠেছে রংধনু। হিমালয়ের আরেক চূড়ায় উঠেছেন কয়েকজন পর্বতপ্রেমী।
এমন নানা ছবিতে ভরে উঠেছে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালার ২ নম্বর গ্যালারি। নেপালের বিখ্যাত কয়েকজন আলোকচিত্রীসহ বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের ১২০টি ছবি স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। শুধু ছবি নয়, পর্বতারোহীদের পোশাক ও অনুষঙ্গও রাখা হয়েছে প্রদর্শনীতে।
তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার বিকেলে। বিভিন্ন পর্বতারোহী ক্লাব ও পর্বতপ্রেমীদের আগমনে মুখর হয়ে ওঠে গ্যালারি। আন্তর্জাতিক এভারেস্ট দিবস উপলক্ষে ‘মাউন্টেন মেমোরিজ: কানেকটিং পিক অ্যান্ড পিপল’ শিরোনামে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব ও নেপাল দূতাবাসের আয়োজনে এই প্রদর্শনী আগামীকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। এর কিউরেটর ইনাম আল হক।
গতকাল উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘হিমালয় পাহাড়ের চূড়ায় যা ঘটছে তার সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের নিচু ভূমিতে এসে পড়ছে। তাই শুধু সৌন্দর্য উপভোগের জন্য নয়, বেঁচে থাকার জন্যও পাহাড়ের ইকো-সিস্টেম রক্ষা করা জরুরি। আমরা পর্বতজয় উদ্যাপন করব, আবার সেখানে যা ঘটছে তার সম্পর্কে সচেতনও থাকব। মনে রাখতে হবে, পাহাড় ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকব।’
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘পর্বতারোহণ শুধু নিজেকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা নয়, এটি মানসিক শান্তিরও কারণ। হিমালয় সুবিশাল। আমরা মানুষেরা খুব ক্ষুদ্র। নিজের অহং বড় হয়ে গেলে হিমালয়ে যাওয়া উচিত। তাতে নিজের ক্ষুদ্রতা বড় করে চোখে পড়বে।’
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বলেন, ‘পাহাড় আমাদের পরিচয় বহন করে। যাঁরা রোমাঞ্চকর বিষয় ভালোবাসেন তাঁদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে এসব পর্বত। এসব পর্বত মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করছে। একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যেও সম্পর্কে ভূমিকা রাখছে।’
আলোচনার একপর্যায়ে সদ্য এভারেস্ট বিজয়ী মো. বাবর আলীকে মঞ্চে ডেকে আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা জানান অতিথিরা। এ সময় তাঁকে নেপালি টুপি পরিয়ে দেন ঘনশ্যাম ভান্ডারি। ফুল ও ক্রেস্ট তুলে দেন অন্য অতিথিরা।