মানুষ আল্লাহর উত্তম সৃষ্টি। সৃষ্টিকুলের মধ্যে তারাই কেবল কষ্ট-পরিশ্রম করে আগামীর জন্য সঞ্চয় করে। মানুষ কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তার উদ্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ কেবল মানুষকেই পরিকল্পনামাফিক পরিশ্রম করার ক্ষমতা দিয়েছেন। অন্য প্রাণীরা পরিশ্রম করলেও তাদের কোনো পরিকল্পনা থাকে না। আল্লাহ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা বালাদ: ৪)
মানুষ যতই কষ্ট করুক না কেন, কাজ শেষে অথবা নির্দিষ্ট সময় পর সে যদি বিশ্রাম না নেয়, তবে সে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে এবং একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে যাবে। তাই আল্লাহ দিন শেষে রাত এবং রাতে পূর্ণ বিশ্রামের জন্য ঘুম সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্রাম। আর আমি রাতকে করেছি আবরণ। এবং আমি দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়।’ (সুরা নাবা: ৯-১১)
রাতে অন্ধকার দিয়ে আবরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো, পার্থিব সব কাজ বন্ধ থাকবে এবং আদম সন্তান নিঃশব্দে ঘুমাবে। লক্ষণীয় বিষয় যে, বিভিন্ন কাজের চাপে মানুষের মস্তিষ্ক যখন অকেজো হয়ে পড়ে, অথবা মাথাব্যথায় সে কাতর হয়ে পড়ে, অথবা কোনো চিন্তায় চিন্তাশক্তি হারিয়ে ফেলে, তখন পূর্ণ বিশ্রামসহ ঘুমালে ঘুম শেষে মাথা ব্যথামুক্ত হয় এবং ফের কাজ করার উপযোগিতা লাভ করে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনিই, যিনি তোমাদের জন্য রাতকে আবরণ ও ঘুমকে আরামপ্রদ করেছেন এবং দিনকে করেছেন ওঠার সময়।’ (সুরা ফুরকান: ৪৭)
বিশ্রাম আল্লাহর বড় নিয়ামত। পরিশ্রম ও বিশ্রামের মধ্যে যেমন নিবিড় ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তেমনি রাত ও ঘুমের মধ্যে রয়েছে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। এটি চিন্তা করে পরিশ্রম করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়