কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ১০০ একর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি অর্ধশতাধিক কৃষক। তাঁদের অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে বারবার পৌর কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। ফলে জমিগুলো এ বছর অনাবাদি পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চড়ুয়াপাড়ার টুপামারির দলায় প্রায় ১০০ একর আবাদি জমি রয়েছে। এসব জমিতে শুধু ধান চাষ হয়। এই ধান চাষ করে স্থানীয় পরিবারগুলোর খাবারের জোগান চলে। কিন্তু এবার মৌসুম শেষ হতে চললেও জলাবদ্ধতার কারণে এখনো জমিগুলোতে চারা রোপণ করা যায়নি। অথচ অতীতে কখনো এমন জলাবদ্ধতা হয়নি। পানি সরাতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনারসহ মেয়রকে অনুরোধ করেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় কৃষক আফতাব বলেন, ‘প্রতিবছর এই সময়ে টুপামারির দলা ধানের সবুজ চারায় ভরে ওঠে। কিন্তু এ বছর জলাবদ্ধতার কারণে কেউ ধান রোপণ করতে পারেননি। অথচ মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা আবাদ করতে না পারলে কী খাব, পরিবারকে কী খাওয়াব?’
টুপামারির দলায় প্রায় তিন একর জমি আছে কৃষক আনোয়ার ও তাঁর পরিবারের। কিন্তু জমিতে এখনো হাঁটুপানি আর কচুরিপানা। ফলে এ বছর তাঁরা কেউ ধান রোপণ করতে পারেননি। চারা রোপণ করতে গেলে তা পানিতে ডুবে যাচ্ছে।
আনোয়ার বলেন, ‘আমরা অসহায়। কেউ আমাদের দিকে তাকায় না। একরের পর একর জমি পানিতে তলায় আছে। আমরা কেমন করি আবাদ করব? পৌরসভায় বারবার গিয়েও কাজ হচ্ছে না।’
কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকেরা ভাদ্র মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত আমনের চারা রোপণের সময় পাবেন। এরপর নিয়মিত জাত রোপণ করলে ফলন ভালো হবে না। তবে নাবি (বিলম্বিত) জাতের ধান রোপণ করার সুযোগ থাকবে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃষি বিভাগের করণীয় কিছু নেই। তবে পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরিষাসহ বিভিন্ন শস্যবীজ প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, ‘ওই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ওই জায়গার দক্ষিণে নীলারাম স্কুলের কাছে সড়কে পাইপ বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। শিগগির আবারও নালা খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি লোক পাঠিয়ে পানি নিষ্কাশনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’