শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
দিন দিন বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছে না তারা। মাস শেষ না হতেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পকেট। সব মিলিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের মধ্যে অধিকাংশ সবজির দামই আগের তুলনায় বেশি। উপজেলার উৎরাইল হাটে কাঁচা মরিচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০, বেগুন ৬০-৬৫, ঢ্যাঁড়স ৪৫-৫০, আলু ৩০-৩৫ টাকা। এ ছাড়া লালশাক, ডাঁটাশাকসহ বিভিন্ন শাকের আঁটি ১০-২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের তুলনায় আঁটি ছোট হয়েছে। এদিকে লাউ, কুমড়া, কচু, ঝিঙেসহ অন্যান্য সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৭০-১৮০ টাকা কেজি। চাষের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া নদী ও খাল-বিলের মাছের দাম আকাশছোঁয়া বলে ক্রেতারা জানান।
বাজারে আসা ক্রেতারা বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই।
আবুল কাশেম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘যেদিন মাছ কিনতে পারতাম না, সেদিন ডিম কিনে নিতাম। ডিম, আলু আর ডাল দিয়ে তিন বেলা খাওয়া যেত। ঘরের বাচ্চারাও খুশি থাকত। এখন কী করব? ডিমের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে ডিমও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।’
আরেক ক্রেতা জানান, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে মাস পার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইদানীং প্রতি মাসেই আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হচ্ছে। খাদ্যপণ্য কিনতেই আয়ের টাকা শেষ হয়ে যায়। এ ছাড়া চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ করতে বেতনের অবশিষ্ট থাকছে না। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে।
সবজি বিক্রেতা মো. রিপন বলেন, পেঁয়াজ, মরিচসহ বেশির ভাগ কাঁচা তরকারির দাম বেশি। এখন বিক্রিও কিছুটা কমেছে। পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজিও কম বিক্রি হচ্ছে। আমরা তো বেশি দামেই কিনে আনি। আমাদের কিছু করার নাই।’
উপজেলার উৎরাইল হাটের ব্রয়লার মুরগি ব্যবসায়ী আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই সপ্তাহে মুরগি আনিনি। দাম বেশি। দাম বাড়ায় ক্রেতাও কমেছে। গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে মুরগির চাহিদা কম।
এদিকে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে জানিয়ে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারিনির্ধারিত মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই আমরা বাজার মনিটর করছি। তা ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কোনো অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। উপজেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং নিয়ে তৎপর রয়েছে।’