ধোবাউড়ায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের জন্য কেনা হয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন। তা দিয়ে এরই মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। অর্থ, সময় ও শ্রম কম লাগার কারণে অনেকেই ধান কাটার জন্য এই মেশিনের ব্যবহার করছেন। এ মেশিনে দ্রুত ধান কাটতে পেরে খুশি কৃষকেরাও।
কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই মেশিনের মাধ্যমে ঘণ্টায় এক একর জায়গার ধান কাটার পাশাপাশি মাড়াই-ঝাড়াইয়ের পর বস্তাভর্তি করা যায়। ফলে কৃষকের মজুরি সাশ্রয় হচ্ছে। এখন কৃষক ধান বস্তাবন্দী করে অল্প সময়েই মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারছেন। অনেকে আবার মাঠেই ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন ধান ব্যবসায়ীদের কাছে।
উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের ডোমঘাটা গ্রামের কৃষক জুয়েল সরকার। তিনি প্রকল্পের সহায়তা নিয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এ যন্ত্র কিনেছেন। ২৮ লাখ টাকা মূল্যের যন্ত্রটির জন্য সরকার ১৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দেয়। নিজের জমির ধান কাটার পরে মেশিনটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেও তিনি লাভবান হচ্ছেন।
জুয়েল সরকার বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় মেশিন নিয়ে গিয়ে ৫০ একর জমির ধান কেটেছি। এ ব্যবসায় মেশিন চালনাসহ ৬ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। কয়েক লাখ টাকা আয় করা যাবে বলে আশা করছি। একরপ্রতি ধান কাটার জন্য ৪ হাজার টাকা করে নিই। এক একর জমির ধান কাটার জন্য প্রায় ১ হাজার টাকার তেল লাগে।’
বাঘবেড় গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এই মেশিন দিয়ে আমার পাঁচ একর জমির ধান কাটা হয়েছে। আমি সব ধান মাঠেই বিক্রি করে দিয়েছি। এই মেশিনে ধান কাটা দেখার জন্য জমিতে ভিড় করছিলেন অনেকে।’ অপরদিকে রমজান বলেন, ‘এই মেশিন দিয়ে ধান কাটায় অর্ধেক টাকা লেগেছে। ঝাড়াই-মাড়াইয়ের সময় সাশ্রয় হয়েছে। আগে মাড়াইয়ের জন্য আলাদা খরচ হতো।’
মুন্সিরহাট এলাকার কৃষক হেকমত আলী বলেন, এলাকায় ধান কাটার কৃষিশ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। শ্রমিক দিয়ে ধান কাটার খরচ অনেক বেশি। এই ধরনের মেশিন ব্যবহারে কৃষকের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম তুষার বলেন, ‘চাষাবাদের জন্য যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই। আমন মৌসুমের আবাদের ধান কাটা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এই হারভেস্টর মেশিন ক্রয় করতে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আশা করছি আগামী বছর আরও বেশি কৃষক এই মেশিন ক্রয় করবেন।’