ইরানের অন্যতম আলোচিত নির্মাতা মোহাম্মদ রাসুলফ। আব্বাস কিয়ারোস্তামি, আসগর ফরহাদি, দারিয়ুশ মেহেরজুই, জাফর পানাহির সঙ্গে বিশ্বজুড়ে তাঁর নামও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। রাসুলফের চলচ্চিত্রে উঠে এসেছে ইরানের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি। যে কারণে একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়েছে তাঁকে। গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবের বিচারক নির্বাচিত হওয়ার পরও তিনি অংশ নিতে পারেননি ইরান সরকারের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে। এবারের ৭৭তম আসরের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে জায়গা পেয়েছে রাসুলফের নতুন সিনেমা ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’। এটি নিয়েও খড়্গহস্ত হয়েছে ইরান সরকার।
ভ্যারাইটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ যাতে কান উৎসবে প্রদর্শিত না হয়, সে চেষ্টা করছে ইরান সরকার। মোহাম্মদ রাসুলফকে চাপ দেওয়া হচ্ছে যাতে তিনি সিনেমাটি উৎসব থেকে সরিয়ে নেন। রাসুলফের আইনজীবী বাবাক পাকনিয়া সম্প্রতি এক্সে পোস্ট করে জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ সিনেমার প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পীদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে তাঁদের। দেশ ছাড়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে। পাকনিয়া লিখেছেন, ‘এ সিনেমার অভিনয়শিল্পীদের ইরানের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাঁরা যেন পরিচালককে বলেন কান উৎসবের তালিকা থেকে এ সিনেমা সরিয়ে নিতে।’
এবারের কান উৎসবে রাসুলফ অংশ নিতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁর আইনজীবী বাবাক পাকনিয়া। রাসুলফের ‘দেয়ার ইজ নো ইভিল’ ও ‘আ ম্যান অব ইনটেগ্রিটি’ সিনেমার প্রযোজক কেভিশ ফারনাম ভ্যারাইটিকে জানিয়েছেন, রাসুলফ এ মুহূর্তে আত্মগোপনে আছেন, তাই কান উৎসব থেকে সিনেমা সরিয়ে নিতে তাঁকে সরাসরি চাপ দিতে পারছে না ইরান সরকার। তবে সিনেমার প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পীদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ সিনেমায় ইরানের বিচারব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন রাসুলফ। সিনেমার গল্প ইমান নামের এক ব্যক্তিকে ঘিরে, যিনি তেহরানের বিপ্লবী আদালতের একজন তদন্তকারী বিচারক। একসময় দেশব্যাপী রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। নাগরিকরা প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। ইমানের মনেও অবিশ্বাস ও বিভ্রান্তি তীব্র আকার ধারণ করে। ১৪ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া কান উৎসবে সিনেমাটির প্রিমিয়ার হওয়ার কথা।