Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

এক পায়ে অদম্য সাহাবের চাওয়া শুধু একটা ‘পাকা’ রাস্তা

নুরুল আলম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) 

এক পায়ে অদম্য সাহাবের চাওয়া শুধু একটা ‘পাকা’ রাস্তা

সাহাব উদ্দিনের জন্মই হয়েছে এক পা নিয়ে। স্বাভাবিক মানুষের মতো দুই পা না থাকার কষ্টটা সাহাব ভুলেছেন নিজের অদম্য মনোবল আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের এক পায়ের এই তরুণ এখন মিরসরাইয়ের ৭ লাখ মানুষের গর্ব।

মিরসরাইয়ের মায়ানী গ্রামের সারেং বাড়ির মজিবুল হক ও জাহেদা বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের সবার ছোট সাহাব। পৃথিবীতে তাঁর আগমন এক পা ছাড়াই।

তবে বড় হয়ে অভিভাবকদের বোঝা হননি সাহাব। ছোটবেলা থেকেই খেলার পাগল তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পাত্তা না দিয়ে স্কুলজীবনে নিজেই টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বন্ধুদের নিয়ে আসতেন মাঠে। খেলছেন নিজেও। নিজের চেষ্টায় ২০১৬ থেকে খেলছেন স্ট্যান্ডিং ক্রিকেটে। ২০১৮ সালে যুক্ত হন হুইলচেয়ার ক্রিকেটের সঙ্গে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাফুফের আমপুচি ফুটবলের বাচাইপর্বে সারা দেশের ১৪ জনের মধ্যে সেরা সাত ফুটবলারের একজন হন সাহাব। এই ১৪ ফুটবলারকে নিয়ে গঠন করা হয় জাতীয় আমপুচি দল। দুই মাসের অনুশীলন ক্যাম্প হয়েছে এই ফুটবলারদের নিয়ে। এই মার্চে কমলাপুর স্টেডিয়ামে ইন্দোনেশিয়া, জাপান ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে আমপুচি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে স্বাগতিক বাংলাদেশ দলে ছিলেন সাহাব।

সাহাব এক পায়েই স্বাভাবিক মানুষের মতো গাছে চড়তে জানেন। পারেন সাইকেল, গাড়ি চালাতেও। আজকের পত্রিকাকে তিনি শোনালেন নিজের অদম্য মানসিকতার গল্প, ‘আমি স্বাভাবিক মানুষের মতো যেকোনো কাজই করতে পারি। ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছি ফুটবলকে। প্রথমে জীবনের শুরুতে খেলার জন্য আমার ক্রাচ কেনার সামর্থ্য ছিল না। বুট কেনার স্বপ্ন ছিল না। গ্রামে ভালো মাঠে খেলতে না পেরে খেলতাম বাড়ির সামনের মাঠ, ফাঁকা জমিতে।’

খেলাধুলার পাশাপাশি পড়ালেখাটাও চালিয়ে যাচ্ছেন সাহাব। ফেনী সরকারি কলেজে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। ফুটবল নিয়ে তাঁর স্বপ্ন আকাশসম। বললেন, ‘আমার বিশ্বাস একদিন আমপুচি ফুটবল বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব দরবারে সম্মান বয়ে আনবে। আমরা প্রতিবন্ধীরাও কিছু করতে পারি, সেটাই সবাইকে দেখাতে চাই।’

বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর স্বপ্ন দেখা সাহাবকেও প্রতিদিন পার হতে হয় বাধার পাহাড়। বাড়ির পাশে এবড়োখেবড়ো রাস্তায় বারবার ধাক্কা খায় প্রত্যয়ী এই তরুণের জীবন। সাহাব তাই বলছেন, ‘আমার বাড়ির রাস্তাটা চলাচলের অযোগ্য। আমি এক পায়ে খেলার মাঠে খেলতে পারি, কিন্তু বাড়ির রাস্তায় বড় বড় গর্ত হওয়ার কারণে ক্রাচ নিয়ে চলতে কষ্ট হয়। সরকার যদি রাস্তাটা পিচঢালাই করে দেয়, আর কিছু চাই না।’

সাহাবের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মিরসরাইয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা সাবরিনা লিনা বলেন, ‘এক পায়ে খেলে সাহাব সুনাম বয়ে এনেছে। তাঁর জন্য যত সহযোগিতা প্রয়োজন, আমরা পাশে আছি।’ আর মায়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামী বলেন, ‘সাহাবের চাওয়াটি সাধারণ। এটি একটি সরকারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে। আন্তরিকভাবে চেষ্টা করব, তাঁর চাওয়া পূরণ করতে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ