পঞ্জিকার হিসেবে বর্ষাকাল চললেও কৃষকেরা বৃষ্টির অভাবে আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। পানি না থাকায় মাঠের অনেক জমি ফেটে যাচ্ছে। কৃষকদের বাধ্য হয়ে সেচযন্ত্র ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে শুরুতেই বেড়ে যাচ্ছে চাষের খরচ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
পীরগঞ্জ: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা পানির অভাবে চারা রোপণ করতে পারছেন না। প্রচণ্ড রোদে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। চাষ দিয়ে রাখা জমিতে কাদার পরিবর্তে ধুলো উড়ছে।
সেতরাই গ্রামের কৃষক রিপন আলী বলেন, ‘শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচে খরচ অনেক। সে তুলনায় ধানের দাম পাওয়া যায় না। সেচ দিয়ে আবাদ করার তো সামর্থ্য নেই।’
এ বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী মো. খায়রুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির দেখা না মিললে সম্পূরক সেচের গভীর নলকূপগুলো চালু করা হবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে তা চালু করা হয়েছে।
রাণীশংকৈল: বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ধানের জমিতে পানি নেই। সেচের অভাবে মাঠ ফেটে রয়েছে। উপজেলার নয়ানপুর এলাকার কৃষক জামালউদ্দীন বলেন, গত বছর জমি থেকে পানি বের করে চারা রোপণ করতে হয়েছে। কিন্তু এবার তার উল্টো। সেচ দিয়ে চারা লাগাতেই পানি শুকিয়ে মাঠ ফেটে গেছে।
হাটগাঁও গ্রামের কৃষক রহমতুল্লাহ বলেন, ‘প্রায় ১০ বিঘা জমিতে পানির অভাবে ধান রোপণ করতে পারছি না। শ্যালোমেশিন দিয়ে চাষাবাদ করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বিঘাপ্রতি পানি দিতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, নলকূপের ব্যাটারি চুরি হয়ে যাওয়ায় কিছু জায়গায় সেচের সমস্যা হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দু-চার দিনের মধ্যেই বৃষ্টিপাত হবে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক পানির অভাবে চারা রোপণ করতে না পারায় চরম বিপাকে পড়েছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার হাজারো কৃষক। অনেকেই বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকলেও কেউ কেউ সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছেন। এতে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ।
উপজেলার বাংলাবান্ধা এলাকার কৃষক নকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তিন বিঘা জমি আমন ধান করার জন্য প্রস্তুত করেছি। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা নষ্ট এবং চাষ করা জমি শক্ত হয়ে যাচ্ছে।’
একই সমস্যার কথা জানান নাওয়াপাড়া এলাকার কৃষক হবিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করছি। এতে খরচ হচ্ছে কয়েক গুন বেশি। চারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান জানান, গত কয়েক দিন ধরে উপজেলায় ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে । তবে দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।