রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামে শতবর্ষী মসজিদের চারটি মিনার অনেক আগেই ধসে পড়েছে। দেয়ালের আস্তরণ খসে পড়ে লতাপাতা গজিয়েছে। সংস্কার না করায় মসজিদের অবশিষ্ট অংশ যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, পীরগাছা চণ্ডিপুর গ্রামে শতবর্ষী মসজিদটি মোগল আমলে নির্মিত। এ ছাড়া চণ্ডীপুর গ্রামটি ছিল ইংরেজবিরোধী বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি। এই মসজিদের পাশে ইংরেজদের আক্রমণে নিহত হন মন্থনার জমিদার জয়দুর্গা দেবী (দেবী চৌধুরাণী) ও তাঁর সঙ্গীরা।
জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার পশ্চিমে পীরগাছা-রংপুর সড়কের পাশেই চণ্ডীপুর গ্রামে শতবর্ষী মসজিদটি অবস্থিত। এর দেয়ালের আস্তরণ খসে পড়েছে অনেক আগেই। দেয়াল ভেদ করে গজিয়ে উঠেছে গাছগাছালি আর লতাপাতা। ওপরের বিশাল আকৃতির তিন গম্বুজে ফাটল ধরেছে। চারপাশের চারটি মিনার ধসে পড়েছে। মসজিদটি সংস্কারের অভাবে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
মসজিদে গিয়ে দেখা গেছে, ভেতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি দরজা। উত্তর ও দক্ষিণে আরও দুটি সরু জানালা রয়েছে। পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে কারুকার্যখচিত তিনটি মেহরাব। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ১৫ ফুট। দেয়ালের পুরু প্রায় ৪ ফুট। দেবী চৌধুরাণী কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন সরকার বলেন, ‘সংরক্ষণের অভাবে মসজিদটি অনেক আগেই জৌলুশ হারিয়েছে। এরপরও প্রাচীন নিদর্শন মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত মোগল আমলের স্মৃতিবিজড়িত মসজিদটি সংস্কার করে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা হোক।’
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, ‘পীরগাছায় এখনো গড়ে ওঠেনি কোনো পর্যটন এলাকা। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদটি সুরক্ষার উদ্যোগ নিলে এটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করবে।’