ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) মফিজ লেকের সংস্কারের নামে কাটা হচ্ছে গাছ। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, যত গাছ কাটা হয়েছে এর তিনগুণ লাগানো হবে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসের হাতিরঝিল খ্যাত মফিজ লেক কচুরিপানায় ভরে আছে। অপরিষ্কার অবস্থায় রয়েছে লেকটি। এতে লেকটি হারাতে বসেছে নিজস্ব সৌন্দর্য। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সম্প্রতি মফিজ লেক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সংস্কার করতে গভীরতা ও প্রশস্ততা বাড়াতে এসব গাছগুলো কাটা হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে গাছ কাটার অনুমতি দেন প্রধান প্রকৌশলী। এ পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০টি গাছ কাটা হয়েছে।
তবে এস্টেট অফিস থেকে গাছ কাটার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন এস্টেট অফিসের পরিচালক টিপু সুলতান। ক্যাম্পাসে ভূসম্পত্তির মালিক এস্টেট অফিস। এর আগেও উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ক্যাম্পাসে কাটা পড়ছে ১ হাজার ৪৩৫টি গাছ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, এমনভাবে আগে গাছ না কেটে এর বিকল্প ছিল কি না, দেখা উচিত ছিল। এভাবে গাছ কাটতে থাকলে আমাদের ক্যাম্পাস একদিন সবুজঘেরা যে ঐতিহ্য, তা হারাবে।
পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েসের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, লেকে বৃক্ষ নিধন করে প্রকৃতির ওপর নির্মমতা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। গাছ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য রক্ষা করে এবং ভৌগোলিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। এখানে বসবাস করে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে, পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ে ঠিক তেমনি আবাসন হারাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। ক্যাম্পাসে এভাবে বৃক্ষ নিধন অব্যাহত থাকলে ক্যাম্পাস হারাবে তার সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন তারেক বলেন, ‘কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির অনুমতিতে কাজটি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের পরিচালক টিপু সুলতান বলেন, ‘এস্টেট অফিসের অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে একটি গাছ কাটা যায় না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়মের বাইরে গিয়ে এ কাজ করেছে। যাঁরা আমাদের পরিচালক, তাঁরা নিয়ম না মানলে আমাদের আর করার কিছু থাকে না।’