বাজার দরের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে খোলাবাজারে চাল ও আটা পেতে বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে ছুটছেন মানুষ। তবে ক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। সেই সঙ্গে শুধু পৌরসভায় চার ডিলারের মাধ্যমে চাল-আটা বিক্রি করায় দূর থেকে মানুষকে আসতে হচ্ছে। সে জন্য তাঁরা বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে চরম জটলার সৃষ্টি হওয়ায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
সবার আগে চাল-আটা পাওয়ার আশায় কেউ ইট, আবার কেউ ব্যাগ রাস্তায় রেখেছেন জায়গা নির্ধারণ করতে। কেউ নিজেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। গতকাল সকালে এ চিত্রই দেখা গেছে পৌরসভার পুরাতন বাজার, আক্কেলপুর মুজিবর রহমান সরকারি কলেজ মাঠ, কলেজ বাজার ও পশুর মোড় এলাকার খোলাবাজারে চাল-আটা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে।
ভোর চারটার পর থেকে ওই কেন্দ্রগুলোর সামনে লাইন বড় হতে থাকে। বিক্রি শুরু হয় সকাল ৯টা থেকে। তখন থেকেই জটলা বাড়তে থাকে। চলমান পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নির্দেশনা জারি করলেও চাল-আটা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে তা মানতে দেখা যায়নি।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোলাবাজারে ন্যায্যমূল্যে চাল-আটা বিক্রি শুরু করেছে সরকার। শুধু আক্কেলপুর পৌরসভার চারটি পয়েন্টে বিক্রি করা হচ্ছে এ দুই পণ্য। প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা, আর আটা বিক্রি করা হচ্ছে ১৮ টাকা কেজি দরে।
চাল-আটা নিতে আসা লোকজন বলছেন, যেহেতু এ কার্যক্রম উপজেলার মধ্যে আর কোথাও চালু নেই শুধু পৌরসভায়; তাই উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন থেকেও লোকজন এসে এখানে ভিড় করছেন।
রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কুদ্দুস হোসেন বলেন, ‘শুধু পৌরসভায় সরকার চাল-আটা দিচ্ছে, আমরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আমাদেরও এই সেবা সরকারকে দিতে হবে। আমি আজ (বৃহস্পতিবার) অনেক কষ্টে দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ৫ কেজি আটা ৯০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’
অপর এক বাসিন্দা আজিজুল হক বলেন, ‘চাল-আটা ইউনিয়ন পর্যায়েও দেওয়ার অনুরোধ করছি সরকারের কাছে। সেই সঙ্গে বিক্রির পয়েন্ট বাড়ালে করোনার সময় লোকজন এভাবে ভিড় করত না।’
সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ছয়টায় পশুর মোড়ে বিক্রয়কেন্দ্রে এসে দেখি লোকজন লাইনে ব্যাগ রেখে সিরিয়াল দিয়ে রেখেছে। কেউ কেউ আবার ইটও দিয়ে রেখেছে। বিক্রি শুরু হলে লোকজনের ভিড় বেড়ে যায়। এখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালায় নেই।’
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোকলেচ আল আমিন বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথম শ্রেণি পৌরসভায় চারটা ডিলার থাকার কথা। এখানে চারটা ডিলারের মাধ্যমেই চাল-আটা বিক্রি করা হচ্ছে। কোথাও কোনো ঘাটতি নেই। তবে লোকজনের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা কম।