হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
নরসিংদীর রায়পুরায় আখ চাষ আগের আগের থেকেও বেড়েছে। ভালো ফলন ও চাহিদার পাশাপাশি আখের দাম নিয়েও সন্তুষ্ট কৃষক। এ কারণে দিন দিন আখ চাষে ঝুঁকছেন এখানকার চাষিরা। চলতি মৌসুমে এরই মধ্যে আখের বাজার জমে উঠেছে। বেচাকেনায় ধুম পড়েছে খুচরা ও পাইকারি বাজারগুলোতে। ভালো দাম পাওয়ায় আখচাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
রায়পুরা শ্রীরামপুর বাজারে দুই দিন সাপ্তাহিক হাটবারে জমে ওঠে আখের বিশাল বাজার। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যানবাহনে করে নিয়ে আসে চাষি পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ওই হাটে কম দামে ভালো মানের আখ পাওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পাইকার ও ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আড়তদারদের কাছে পাঠানো হয় এখানকার আখ।
উপজেলার আমিরগঞ্জ, মুছাপুর, হাইড়মাড়া, চলতি মৌসুমে মুছাপুর, অলিপুরা, খাকচক, পলাশতলী, গোবিন্দপুর, হাসনাবাদ, দক্ষিণ মির্জানগরসহ বিভিন্ন স্থানে (তবে প্রধানত পলাশতলী ইউনিয়নে) প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। এ বছর প্রায় ১ হাজার ৫৭৬ মেট্রিকটন আখ পাওয়া যাবে বলে উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
সরেজমিনে গত শুক্রবার গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় জমিতে আখের আবাদ। পলাশতলী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় শুধু আখ আর আখ। কৃষকেরা জমিতে কাজ করছেন। কেউ আখ তুলছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। আবার অন্য শ্রমিকেরা এসব আখ সড়কে নিয়ে স্তূপ করে রাখছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে অধিকাংশ জমির আখ বিক্রি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৩৩ হেক্টর জমিতে। গত বছর ৩১ হেক্টর জমিতে আখ আবাদ করেছিল। সে তুলনায় এ বছর চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চাষি অলিউর রহমান বলেন, ‘এ বছর আখের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।’
পাইকারি ব্যবসায়ী খুকন মিয়া বলেন, এখানকার আখ খুব সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখান থেকে আখ কিনে বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পাঠিয়ে থাকি। আখ ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, স্থানীয় জাতের আখের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে উপজেলার আখের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলনও খুবই ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাজারে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। কৃষকেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।