বগুড়ায় গতকাল মঙ্গলবার আবারও ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহের মধ্যে তিনবার ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ঘটনা ঘটল। একের পর এক লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার। গতকাল মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির সদস্য ট্রেন পরীক্ষক আব্দুল মান্নান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বোনারপাড়া-সান্তাহার রুটে সুখানপুকুর স্টেশনে প্রবেশের সময় কলেজ ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি বোনারপাড়া থেকে সান্তাহার যাওয়ার সময় সুখানপুকুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করার জন্য ২ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার পরপর পেছনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। তবে ১ নম্বর মেইন লাইন স্বাভাবিক থাকায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
জানতে চাইলে ট্রেন পরীক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘যে ট্রেনগুলো বারবার লাইনচ্যুত হচ্ছে, সেই বগিগুলো অনেক পুরোনো। এ ছাড়া প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য দ্বিতীয় লাইন রেলের ভাষায় যাকে লুক লাইন বলে, সেই লুক লাইনের অবস্থা জরাজীর্ণ। লাইনে কোনো পাথর নাই। লুক লাইনগুলো ব্যবহার কম হওয়ায় মেরামত সময়মতো করা হয় না। পাথর না থাকায় স্লিপারগুলো অনেকটা মাটির মধ্যে বসে গেছে। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যাওয়া ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার একটি কারণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্রেনের একটি বগি সাধারণত ৩৫ বছর চলে। কিন্তু এই রুটে চলাচলকারী লোকাল ট্রেনের বগিগুলোর বয়স ৩৫ বছরের অনেক বেশি।’
এর আগে গত ৩০ জুন রাত পৌনে ৯টার দিকে একই রুটে গাবতলী স্টেশনে প্রবেশের সময় সান্তাহার থেকে বোনারপাড়াগামী কলেজ ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল। মেইন লাইনে কলেজ ট্রেনটি লাইনচ্যুত হওয়ায় তিন ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
এর আগে গত ২৫ জুন সকাল সাড়ে ৮টায় সুখানপুকুর স্টেশনে প্রবেশকালে কলেজ ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল। এর ১৫ মিনিটের ব্যবধানে গাবতলী-সুখানপুকুর স্টেশনের মাঝামাঝি লালমনিরহাটগামী পদ্মরাগ ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সেদিন সান্তাহার-বোনারপাড়া রুটে দেড় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।