২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরার পর টানা দেড় বছর আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। কারণটা অবশ্যই কোভিড মহামারি। লম্বা বিরতির পর ঘরের মাঠে আফগানিস্তান সিরিজ দিয়ে আবার মাঠে ফেরার কথা বাংলাদেশ যুবাদের।
২০২২ যুব বিশ্বকাপ হওয়ার কথা আগামী জানুয়ারিতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজে। বিশ্বকাপ সামনে রেখে তৈরি হওয়ার সময়ই আছে ছয় মাস। সেই প্রস্তুতির প্রথম পর্বেই থাকছে আফগানিস্তান সিরিজ। অবশ্য আফগানদের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই সিরিজটার পাশে বড় প্রশ্ন চিহ্ন বসিয়ে দিয়েছে।
তালেবানরা আফগানিস্তান দখলে নেওয়ায় ইতিমধ্যে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিও পরিবর্তন হয়েছে। তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী গতকালও জানিয়েছেন, সিরিজ বাতিল নিয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। সিরিজের ভাগ্যে যাই থাক, আগামী ছয় মাসে যুবাদের চার থেকে পাঁচটি আন্তর্জাতিক সিরিজ-টুর্নামেন্ট নিশ্চিত করছে বিসিবি।
২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের একাধিক বিদেশ সফর। কঠিন কন্ডিশনে বেশি খেলে নিজেদের ভালোভাবে তৈরি করেছিলেন আকবর আলীরা। মহামারির ধাক্কায় বর্তমান দলের সে সুযোগ হয়নি বললেই চলে।
তবে শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে বিসিবি চাইছে আগামী কয়েক মাসে ঘাটতি পুষিয়ে নিতে। সে লক্ষ্যেই কাল সিলেটে রওনা দিচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আফগানিস্তান সিরিজ সামনে রেখে পরশু সিলেটে অনুশীলন শুরু করবেন যুবারা। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপক আবু ইমাম কায়সার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্বকাপ সামনে রেখে আমরা অনেক গুরুত্ব দিয়েই প্রস্তুতি নিতে চেয়েছি। দুর্ভাগ্য, করোনা সব এলোমেলো করে দিয়েছে। এখন যতটুকু সময় পাচ্ছি, সেটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করাটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
যতই অনুশীলন ক্যাম্প হোক, আন্তর্জাতিক আবহে ম্যাচ না খেললে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থেকেই যায়। বিসিবি তাই আগামী ছয় মাসে টানা আন্তর্জাতিক সিরিজ-টুর্নামেন্ট রাখতে চাইছে যুবাদের সামনে। সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তান সিরিজের পর অক্টোবরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ আয়োজনের পরিকল্পনা বিসিবির। নভেম্বরে একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনেরও চিন্তা আছে তাদের। ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ খেলবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জানুয়ারিতে বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজ খেলবেন যুবারা।
আগামী ছয় মাসে যুবাদের প্রতিটি সিরিজই দেখা হচ্ছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপক বলছেন, ‘সব সিরিজ সমান গুরুত্ব দিয়ে খেলতে চাই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের পর পাকিস্তান সিরিজ, ত্রিদেশীয় সিরিজ, এশিয়া কাপ– বিশ্বকাপের আগে ২০-২৫টি ম্যাচ খেলার আশা করছি।’
আগামী ছয় মাসে বাংলাদেশের সব প্রতিপক্ষই এশিয়ার। এশিয়ার দলগুলোর সঙ্গে বেশি খেলার যুক্তি হিসেবে আবু ইমাম কায়সার বলেন, ‘বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে ভেন্যুগুলোয় খেলা হবে, দু-একটা বাদে বেশির ভাগ কন্ডিশনের সঙ্গেই আমাদের কন্ডিশনের মিল রয়েছে। উপমহাদেশের দলগুলোর সঙ্গে খেললেই প্রস্তুতিতে বেশি কাজে দেবে।’