নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শিকদারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় তাঁর ছোট ভাই তুহিন শিকদারের হাতের দুটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত রোববার শরীয়তপুর পৌরসভার আটং এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আরও চারজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শহীদুল শিকদার বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে পালং থানা মামলা করেছেন। অভিযুক্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। দুই পরিবারের বিরোধে এই হামলা মামলা ও আটকের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হক ব্যাপারী ও সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ শিকদারের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে নুরুল হক ব্যাপারীর ছেলে ইমরান ব্যাপারীর সমর্থকেরা এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নুরুল হক ব্যাপারী সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক ও নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল হকের ভাই। হামলায় আহত শহীদুল শিকদার ও তুহিন শিকদার আলী আহম্মেদ শিকদারের ছেলে।
পুলিশ জানায়, রোববারের হামলার ঘটনায় ইমরান ব্যাপারী, সবুজ ব্যাপারী, বিপ্লব ব্যাপারীসহ ১৯ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মঙ্গলবার পালং থানায় মামলা করেছেন শহীদুল ইসলাম শিকদার। অভিযুক্ত বাদল খান, শহীদুল ছৈয়াল, রাজন মোল্লা ও রাব্বি ছৈয়ালকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে, গত ৪ সেপ্টেম্বর আলী আহম্মেদ শিকদারের সমর্থকেরা নুরুল হক ব্যাপারীর ছেলে বিপ্লব ব্যাপারী ও তাঁদের ৩ নির্মাণ শ্রমিককে মারধর করেন। এ ঘটনায় ইমরান ব্যাপারীর সমর্থক মিন্টু ছৈয়াল বাদী হয়ে শহীদুল শিকদার, তাঁর ভাই তুহিন শিকদার, মুরাদ শিকদার, নয়ন শিকদার, এমদাদ শিকদারসহ ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করেছেন। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাবেক আইজিপির ভাই নুরুল হক ব্যাপারী। এর পর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চেয়ারম্যান নুরুল হক ব্যাপারী ও সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ শিকদারের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
ইমরান ব্যাপারী বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আলী আহম্মেদ শিকদারের ছেলেরা আমার ভাই ও শ্রমিকদের মারধর করেছেন। ওই ঘটনায় থানায় মামলার আবেদন করা হয়েছে।’
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শিকদার বলেন, ‘সামনে ইউপি নির্বাচন। আমাদের পরিবার যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে এ জন্য নুরুল হকের ছেলেরা হামলা করেছেন। তাঁরা আমার দুই ভাইকে কুপিয়েছে।’
পালং থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, ‘শহীদুল শিকদার ও তাঁর ভাইদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রতিপক্ষের লোকজনও মামলার আবেদন করেছেন। এই মামলাটিও নথিভুক্ত করা হবে। তদন্ত অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’