আমি মনে করি রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতির সমসাময়িক আলোচনায় মনোবিজ্ঞান কার্যত বিবেচনায় নেওয়া হয় না। অর্থনীতি, জনসংখ্যাগত পরিসংখ্যান, সাংবিধানিক সংগঠন এবং আরও অনেক কিছু যথাযথভাবে রাজনীতির আলোচনায় প্রাধান্য পায়। কোরীয় যুদ্ধ শুরুর সময় দক্ষিণ কোরীয় ও উত্তর কোরীয়দের সংখ্যা কত ছিল তা জানতে আমাদের মোটেই বেগ পেতে হয় না। আপনি যদি ঠিক বইটি উল্টিয়ে যান তাহলে তাদের মাথাপিছু গড় আয় কত ছিল, তাদের পরস্পরের সেনাবাহিনীর আকার সম্বন্ধে ধারণা পেতে আপনি সক্ষম হবেন। কিন্তু, ব্যক্তি হিসেবে একজন কোরীয় কী ধরনের মানুষ বা দক্ষিণ কোরীয় ও উত্তর কোরীয়দের মধ্যে স্পষ্টত কোনো পার্থক্য রয়েছে কি না; কিংবা আপনি যদি জানতে চান, জীবন সম্বন্ধে তাদের পরস্পরের ধারণা কী... সেক্ষেত্রে রেফারেন্স বই হাতড়ে কোনো কিছুরই নাগাল পাবেন না এবং আপনি বলতে পারবেন না ইউএনও সম্পর্কে দক্ষিণ কোরীয়রা উৎসাহী কি না বা তাদের ভাই উত্তরের সঙ্গে ইউনিয়ন গড়তে আদৌ আগ্রহী কি না। রাজনীতিকে যদি বিজ্ঞানভিত্তিক হতে হয় এবং যদি এ ঘটনাকে নিয়মিতই আশ্চর্যজনক বলে প্রতীয়মান হতে না হয়, তবে এটা জরুরি যে, আমাদের রাজনৈতিক চিন্তা মানবকর্মের উৎসমূলের আরও গভীরে কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত। স্লোগানের ওপর ক্ষুধার কী প্রভাব রয়েছে? আপনার খাদ্যাভ্যাসের ক্যালোরির পরিমাণের সঙ্গে তাদের কার্যকারিতা কীভাবে ওঠানামা করে? যদি কেউ একজন আপনাকে গণতন্ত্রের প্রস্তাব করে এবং অন্যজন এক বস্তা শস্যদানা নিয়ে হাজির হয়, তাহলে উপোসের কোন পর্যায়ে ভোটের চেয়ে
খাবারকেই আপনি বেছে নেবেন? এ জাতীয় প্রশ্ন একবারেই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।...
মানুষের যাবতীয় কর্মচাঞ্চল্য উৎসারিত আকাঙ্ক্ষা থেকে। কিছু উৎসুক নীতিশাস্ত্রজ্ঞ এমন একটি ভুল তত্ত্বকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, যেখানে বলা হয়েছে দায়িত্ববোধ ও নীতিবোধের স্বার্থে অভিলাষ বা আকাঙ্ক্ষা ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব।
বার্ট্রান্ড রাসেল ১৯৫০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।