দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরার জন্য কেনা ১০৯টি যন্ত্র কোনো কাজেই আসছে না। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেনা যন্ত্রগুলো এখনো বাক্সবন্দী হয়ে আছে। এতে গচ্চায় যেতে বসেছে সরকারের প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, শিক্ষকদের সময়মতো প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ১০৯টি বিদ্যালয়ের জন্য যন্ত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে বিদ্যালয়গুলো টানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকায় সেগুলো আর স্থাপন করা হয়নি। এখন দেখা দিয়েছে চুরির ভয়। এ ছাড়া যন্ত্রগুলোর সঠিক ব্যবহার এবং নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও কর্তৃপক্ষ জানে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজিরা মেশিন কিনতে প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি যন্ত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনা হয়। এগুলো কেনার পর থেকেই প্যাকেটজাত অবস্থায় আছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ইতিমধ্যে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ফুলবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস কে মোহাম্মদ আলী বলেন, যন্ত্রগুলো যখন কেনা হয়, তার কিছুদিনের মধ্যেই করোনার কারণে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ দেড় বছর টানা বন্ধ থাকার পর বিদ্যালয় খোলে। তা ছাড়া বর্তমানে কয়েকটি বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সে কারণে যন্ত্রগুলো লাগানো হয়নি।
এ বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম জানান, করোনার পর যন্ত্রগুলো লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রায়ই উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটছে। ল্যাপটপ, প্রজেক্টরসহ মূল্যবান সরঞ্জাম নিরাপত্তার জন্য শিক্ষকদের বাসাবাড়িতে নিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ কারণে হাজিরার যন্ত্রগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মৎ হাছিনা ভূঁইয়া বলেন, ‘এ পর্যন্ত সাত থেকে আটটি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন জিনিস চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে থানায় বেশ কয়েকটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নৈশপ্রহরী রয়েছেন মাত্র ৩০টি বিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরির ঘটনায় কিছুটা আতঙ্কে আছেন শিক্ষকেরা। এ কারণে হাজিরার ডিভাইসগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে, সে বিষয়টিও আমাদের জানা নেই এবং এ নিয়ে অধিদপ্তর থেকেও কোনো নতুন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।’