আগৈলঝাড়া উপজেলায় সেচ সংকটের কারণে চলতি মৌসুমে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় আছেন চাষিরা। খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। এতে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের সহস্রাধিক কৃষকের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
চাষিরা সেচে সমস্যার কারণে উপজেলায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করলেও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় এমন আশঙ্কা করছেন না।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভুক্তভোগী কৃষক ও সেচ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথ হয়। তাঁরা জানান, উপজেলার গৈলা থেকে গুপ্তের হাট খাল, উপজেলা সদর থেকে বাশাইল খাল, ২ নম্বর ব্রিজ থেকে বাকাল হাট খাল, বাশাইল থেকে বাহাদুরপুর খাল, কাঠিরা থেকে দুশুমী খাল, কাঠিরা থেকে ঐচারমাঠ খাল, বারপাইকা থেকে বলিয়ালী খাল, দক্ষিণ শিহিপাশা থেকে সেরাল খাল, গৈলা থেকে ভদ্রপাড়া খালসহ গ্রামীণ শাখা খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় চলতি বছর বোরো চাষ করতে পারছেন না অনেকেই।
বাকাল গ্রামের চাষি নাছির ফকির জানান, চাষিরা পানির জন্য সেচ ব্যবস্থাপকের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। যে সমস্ত চাষিরা আগে পানি পেয়ে জমিতে ইরি-বোরো বীজ রোপণ করেছিলেন তাদের রোপিত বীজগুলো পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। খালে পানি না থাকায় সেচ ব্যবস্থাপককে বলেও পানি সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান করা যাচ্ছে না।
বাশাইল গ্রামের চাষি জুয়েল মৃধা জানান, বছরের পর বছর খালগুলোর সংস্কার না হওয়ায় নাব্যতা হারিয়েছে। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের জন্য চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকতে হয় চাষিদের।
চাষি হাবুল সরদার, জহিরুল ইসলাম, রহমান আকন, আবু সাইদ সরদার জানান, জরুরি ভিত্তিতে শুকিয়ে যাওয়া খালগুলো পুনঃখনন করা না হলে ভবিষ্যতে উপজেলায় অনাবাদি জমি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি চাষিরা ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়ে খাদ্য উৎপাদন ঘাটতির কবলে পড়বে বলে মনে করেন এলাকার সাধারণ জনগণ।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, ‘আগৈলঝাড়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ৮১৮ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৯ হাজার ৮২৭ হেক্টর জমিতে ইতিমধ্যেই চাষাবাদ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ হেক্টর বেশি। ইরি-বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার ব্যাপারে এখনো হাতে রিপোর্ট আসেনি। তবে আগামী সভায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন।’