মানুষ মরণশীল। কেউ মারা গেলে তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি নিয়ে তাঁর ছেলেমেয়েসহ উত্তরাধিকারীরা বিবাদে জড়ায়। এমনকি আজকাল কেউ কেউ লাশ দাফনকার্য স্থগিত রেখে সম্পত্তি বণ্টনের কাজ করে, যা সম্পূর্ণরূপে ইসলামবহির্ভূত। ইসলামের দৃষ্টিতে, কেউ মারা গেলে তাঁর সম্পত্তিতে ধারাবাহিকভাবে চারটি অধিকার সংযুক্ত হয়, যা তাঁর ওয়ারিশদের বাস্তবায়ন করতে হয়। এ ধারাবাহিকতা লঙ্ঘন করা নিষিদ্ধ। তা হলো—
এক. মৃত ব্যক্তি জীবদ্দশায় যে মানের কাপড় ব্যবহার করতেন, সেইরূপ কাপড় ব্যবহার করে লাশ দাফন সম্পন্ন করা। এতে কোনো প্রকার কার্পণ্য অথবা অপব্যয় করা যাবে না। মৃতের সম্পদ না থাকলে কেউ যদি কাফনের কাপড় দান করে, তবে তা বৈধ হবে।
দুই. মৃতের ঋণ পরিশোধ করা। মৃত ব্যক্তি জীবদ্দশায় কোনো ঋণ করলে তাঁর সম্পত্তি থেকে তা পরিশোধ করতে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যতক্ষণ মৃতের ঋণ পরিশোধ না করা হবে, ততক্ষণ তাঁর অন্তর লটকানো অবস্থায় থাকবে।’ (তিরমিজি) মৃতের সম্পদ না থাকলে তাঁর ঋণ উত্তরাধিকারীরা পরিশোধ করবেন।
তিন. উপরিউক্ত দুটি কাজ সম্পাদনের পর মৃতের অবশিষ্ট সম্পত্তির তিন ভাগের একভাগ মৃতের বিশেষ কোনো অসিয়ত থাকলে তা পূর্ণ করা হবে।
চার. এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা মৃতের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে কোরআন ও সুন্নাহর বিধান মোতাবেক বণ্টন করা হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর কিতাব অনুসারে মৃতের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পদ বণ্টন করো।’ (ইবন মাজাহ)। ইলমুল ফারাইজ বা উত্তরাধিকার আইনের আলোকে সম্পত্তি বণ্টন করা হয়।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়