ঝিকরগাছায় ভালো ফলন এবং কাঁচা পেঁপের আশানুরূপ দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। প্রতি কেজি পেঁপে পাইকারি বিক্রি করে ২৭ থেকে ২৮ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন কৃষকেরা।
এবার আবাদও বেড়েছে উপজেলাটিতে। চলতি মৌসুমে উপজেলাতে গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁপে আবাদ হয়েছে। তবে পেঁপের
দাম খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় নাখোশ ক্রেতারা।
গতকাল শুক্রবার ঝিকরগাছা বাজারে পেঁপে খুচরা বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। আর পাইকারি কাঁচা পেঁপে বিক্রি হয় ১১০০ টাকা করে মণ।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে চাষ হয়েছে ৩০০ হেক্টর। অর্থাৎ ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। অধিদপ্তরের দাবি, এখানকার মাটি পেঁপে চাষের বেশ উপযোগী। তাই কৃষকেরা পেঁপে চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার নারাঙ্গালী গ্রামের আবুহেনা উজ্জ্বল বলেন, ‘ছয় বিঘা জমিতে ফলন্ত পেঁপের গাছ রয়েছে। এ বছর আরও চার বিঘা জমিতে নতুন চারা রোপণ করেছি। ফলন্ত গাছ থেকে গত দুই সপ্তাহে লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি হয়েছে। তবে দুদিন ধরে পেঁপের দাম কিছুটা কমে গেছে। আজ (গতকাল) দাম পেয়েছি ১১০০ টাকা মণ। এর আগে ১২০০ টাকা করে মণ বিক্রি করেছি।’
বোধখানা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘চার বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছি। তাঁর মধ্যে দুই বিঘা জমিতে ফল এসেছে। সেখান থেকে গত সপ্তাহে ৪০ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি। পেঁপের দাম সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা মণ পেয়েছি। এ বছরে এটা সবচেয়ে বেশি দাম ছিল।’
ঝিকরগাছা বাজারের কাপুড়িয়া পট্টি গলিরমুখে সবজি বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি কেজি পেঁপে খুচরা বিক্রি করেছি ৪০ টাকা। খেতে দাম কিছুটা কম হলেও আড়ত থেকে কিনে খাজনা, জায়গা ভাড়াসহ নানা কারণে খুচরায় একটু দাম বেশি পড়ে যায়।’ ঝিকরগাছা বাজারে কথা হয় তরিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে।
তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকারি যে দামে পেঁপে বিক্রি হয়, তার চেয়ে দেড় গুণ বেশি টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। পাইকারি দাম কমলেও খুচরায়
কমে না।’
পেঁপের পাইকারি ক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পেঁপের দাম দু-তিন দিন ধরে একটু কম। মাঝে ১২০০ টাকা মণ পর্যন্ত দাম উঠেছিল। আমরা যে দামে কিনি, তার থেকে একটু বেশিতে বিক্রি করি। খুচরা বাজারে পাইকারির চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ, ‘ঝিকরগাছার মাটি পেঁপে চাষের জন্য উপযোগী। সাধারণত যে মাটিতে ফুল এবং আলু ভালো উৎপাদিত হয়, সেখানে পেঁপেও ভালো চাষ হয়।’