জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে ২৫% বরাদ্দ ও সিলেটের শিক্ষাসংকট নিরসনে আট দফা দাবি বাস্তবায়নে গতকাল বুধবার মিছিল ও সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখা। শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সভাপতি সঞ্জয় কান্ত দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদিয়া নোশিন তাসনিমের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের শাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর রহমান, এমসি কলেজ শাখার সংগঠক সুমিত কান্তি দাস পিনাক, মদনমোহন কলেজ শাখার সংগঠক সাকিব রানা, দোয়েল রায় প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার বারবার উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও শিক্ষা খাতের দিকে তাকালে চোখের সামনে ভেসে উঠে করুণ চিত্র। আমাদের শিক্ষা খাতের বরাদ্দ মোট জিডিপির মাত্র ২.০৮ শতাংশ। যা পার্শ্ববর্তী শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটানের চেয়ে কম। তাই জাতীয় বাজেটের ২৫ ভাগ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ খুবই জরুরি। এদিকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২০’। এতে বিজ্ঞান শিক্ষাকে সংকুচিত করা হয়েছে, বাদ দেওয়া হয়েছে উচ্চতর গণিত। প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কারিগরি শিক্ষাকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, বিভাগ তুলে দেওয়ার কথা বলে বাস্তবে বিজ্ঞান শিক্ষাকে সংকুচিত ও কারিগরি ধারাকে প্রসারিত করা হয়েছে। এ শিক্ষাক্রম শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য ও বিভিন্ন ধারাকে দূর করার জন্য একটি শব্দও ব্যয় করেনি, বরং শিক্ষার সাধারণ ধারাকেই কারিগরি শিক্ষার দিকে ধাবিত করবে। আধুনিক মূল্যায়ন বা ধারাবাহিক মূল্যায়নের কথা বলে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেওয়া ও শিক্ষকদের হাতে প্রচুর মার্কস দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার অবকাঠামো, শিক্ষকদের দক্ষতার অভাব এসব কারণে এই প্রক্রিয়া কার্যকর তো হবেই না বরং বাড়বে স্বজন পোষণ ও দুর্নীতি। তাই এটি বাতিল করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, সিলেটের অনার্স কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক সংকট, আবাসন, পরিবহন সংকট প্রবল। নিয়মিত ক্লাস ও হয় না। এমসি কলেজে বাণিজ্য ও মদনমোহন কলেজে বিজ্ঞান অনুষদ চালুর দাবি দীর্ঘ দিনের। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান জরুরি। পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির নিরিখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিন্ন টিউশন ফি নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু করতে হবে। বক্তারা এসব দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার দাবি জানান।