Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

১৮ বছর তালাবদ্ধ বিদ্যালয়

মেহেরপুর সংবাদদাতা

১৮ বছর তালাবদ্ধ বিদ্যালয়

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ হয়েছিল ২০০৩ সালে। এরপর জমিদাতার মামলার কারণে আটকে যায় স্কুল চালুর কার্যক্রম। ২০১১ সালে সেই মামলা খারিজ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চালু হয়নি বহু কাঙ্ক্ষিত সেই স্কুলটি। এদিকে আশপাশে কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় অনেকেই প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ঝরে পড়ছে। অনেকে আবার ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে হচ্ছে স্কুলমুখী। জানা গেছে, বিদ্যালয়টি চালু না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ। ইতিমধ্যে চুরি হয়ে গেছে বেশ কিছু আসবাব।

জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া একটি গ্রাম। সেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গ্রাম থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গার নাটুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভৈরব নদী পার হয়ে ৪ কিলোমিটার পর বাগোয়ান মাধ্যমিক বিদ্যালয় আর ৩ কিলোমিটার দূরে টেংরামারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অথচ নিজ গ্রামেই দ্বিতল ভবনের একটি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ হলেও এখনো চালু হয়নি।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ বিঘারও বেশি জমির ওপর নির্মাণ করে দ্বিতলবিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন। বিদ্যালয়টির নাম দেওয়া হয় রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ওই বছর দেশে ৫৪টি বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে রশিকপুর ছাড়া বাকি ৫৩টি বিদ্যালয় চালু হয়। হয়েছে এমপিওভুক্তও।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন জানান, বিদ্যালয়টির জন্য রশিকপুর গ্রামের সুলতান শেখ তাঁর স্ত্রী আম্মাতন নেছার নামে ৩ বিঘা ৫ কাঠা, আমির শেখ ১০ কাঠা এবং রতন শেখ ১০ কাঠা জমি দান করেন। জমিদানকারীদের মধ্যে আম্মাতন নেছা দাবি করেন, ৩ বিঘা জমির পরিবর্তে তাঁকে মাঠে ৫ বিঘা জমি দেওয়ার কথা ছিল বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির। কিন্তু সেই জমি না দেওয়ায় জেলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। ২০১১ সালের ৯ মে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। বিদ্যালয়টি চালুর জন্য সব নথিপত্রসহ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় বিদ্যালয়টি এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি।

জমির মালিক আম্মাতন নেছা বলেন, ‘৩ বিঘা আমবাগানের গাছ কেটে আমি বিদ্যালয় নির্মাণের জমি দিয়েছিলাম। তৎকালীন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে কথা ছিল ওই জমির পরিবর্তে মাঠে ৫ বিঘা আবাদি জমি কিনে দেবেন। কিন্তু কমিটি কথা রাখেনি। বিদ্যালয় নির্মাণ করার পর জমি না পাওয়ায় ২০০৪ সালে আদালতে মামলা করি। তবে মামলাটি খারিজ হয়েছে কি না জানি না।’

রশিকপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী খান জানান, ‘পাঠদান শুরুর যাবতীয় উপকরণ এ ভবনে এখনো আছে। বিদ্যালয়ের সামনে রয়েছে একটি বড় খেলার মাঠ। অথচ মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার ১০ বছর পেরোলেও বিদ্যালয়টি চালু হয়নি।’ 
রশিকুপর গ্রামের জিন্নাতয়ারা বলে, ‘ইচ্ছে ছিল উচ্চ শিক্ষায়

শিক্ষিত হব। কিন্তু ৬ষ্ঠ শ্রেণির পরই মা–বাবা জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন। কারণ কাছে কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই।’ 
৭ম শ্রেণির ছাত্র রেদওয়ান জানায়, গ্রামের বিদ্যালয়টি চালু না হওয়ায় ৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে তাকে মুজিবনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়। বিদ্যালয়ে যেতে সময়ের পাশাপাশি অভিভাবকের কাছ থেকে যাতায়াত বাবদ নিতে হয় টাকা। দূরের পথ হওয়ায় অনেক বন্ধুরই নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন সরকার জানান, শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে বিদ্যালয়ের সব কাগজপত্র ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলেই বিদ্যালয়টি চালু করা হবে। 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ