Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

রাজনীতিতে ‘পলিট্রিক্স’!

রহমান মৃধা

রাজনীতিতে ‘পলিট্রিক্স’!

আমাকে প্রশ্ন করা হলো, রাজনীতি কী এবং কেমন একটা জায়গা। আমি বললাম, দেখে, শুনে এবং জেনে মনে হচ্ছে, চমক লাগানো একটি জায়গা। ভালোবাসা দিবসে যেমন আমরা প্রিয়জনকে কিছু দিয়ে চমক লাগিয়ে দিই, ঠিক রাজনীতিতেও আমরা বেশ চমক লাগাতে দেখি। মানে? যেমন বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান শেখ হাসিনা আলোচনার বাইরে থাকা একজনকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দিয়ে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন।

বন্ধু বললেন, ‘উত্তর ভুল হয়েছে। রাজনীতি চমক লাগানোর জায়গা না, রাজনীতিতে নীতি থাকতে হবে। আপনার দেশে যেটা হয়েছে, ওর নাম “পলিট্রিক্স”।’

এ কথা শোনার পর ভাবলাম বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। কী করি! সুইডিশ, ইংলিশ, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, গ্রিক এবং বাংলা ঘাঁটতে শুরু করলাম। প্রথমে দেখি রাষ্ট্রপতি কথাটি যে অর্থে ব্যবহার করি, ভাষাগতভাবে তাতে প্রেসিডেন্টের কাজের সঙ্গে মিল আছে। তবে অনুবাদ করলে প্রেসিডেন্টের মানে কীভাবে রাষ্ট্রপতি হলো, বুঝলাম না!

পরে রাজনীতির মানে খুঁজতে গিয়ে যতটুকু বুঝলাম, রাজকীয় নীতির থেকে রাজনীতি কথাটি এসেছে। অন্যদিকে ফরাসি ও গ্রিকদের থেকে এসেছে ‘পলিটিকস’ শব্দটি, যার মধ্যে ঘাপলা আছে। তারপরও সবকিছু জানার পর এবং বর্তমান বিশ্বের রাজনীতির ভাবসাব দেখে আমার কাছে মনে হলো, যে লাউ, সেই কদু!

সবকিছু বোঝার পরও একটি জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারিনি, সেটা হলো—সব জায়গায় বলা হচ্ছে, জনগণের সেবা করাই নাকি রাজনীতি বা পলিটিকসের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু আমি ভাবছি সেই জনগণটা কে? সবাই উঠেপড়ে লেগেছে জনগণের সেবা দিতে এবং এও বলা হচ্ছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। জনগণ ক্ষমতা দেখাতে পারে শুধু ভোটের মাধ্যমে। কিন্তু তাদের এই ভোট দেওয়ার বিষয়টিও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বা সীমিত করা হয়েছে। যেমন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা সাধারণ জনগণের নেই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হন জনগণের ভোটে। বাংলাদেশে বিনা ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার নজির যেমন আছে, তেমনি রাষ্ট্রপতিও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারেন। যেমন এবার হলেন।

আমি অনেক বছর দেশের বাইরে, তারপর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সঙ্গে সুইডেনের গণতন্ত্রের তেমন কোনো মিল না পাওয়ার কারণে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপককে ফোন দিলাম নানা বিষয়ে আলোচনা করতে। তিনি কোনো এক সময় বললেন, ‘ইদানীং অনেকে ব্যঙ্গ করে বলে রাজনীতির মধ্যে “পলিট্রিক্স” ঢোকানো হচ্ছে।’ আমার মনে ‘পলিট্রিক্স’ শব্দটি নিয়ে বেশ কৌতূহল জাগল এবং সারাংশে উপনীত হলাম। যেমন একটি সূক্ষ্ম পলিটিকসকে যখন একজন পলিটিশিয়ান ‘ট্রিক্স’ করে কাজে লাগিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করেন, তখন তাকে ‘মনোট্রিক্স’ বলা যেতে পারে। ভাষাগতভাবে যদি প্রেসিডেন্টের অর্থ রাষ্ট্রপতি হতে পারে, তবে রাজনীতির ক্ষেত্রে মনোট্রিক্সের পরিবর্তে ‘পলিট্রিক্স’ বলা যেতে পারে।

আমার সহধর্মিণী সুইডিশ। সে রাজনীতি বা ‘পলিট্রিক্স’-এর কোনোটার সঙ্গেই জড়িত নয়। তবে যদি দেখে কোনো বিষয়ে আমার মন খারাপ, তখন সে আমাকে সহজ করতে চেষ্টা করে।

রাজনীতির বিষয়ে আমার এ কথাগুলো শোনার পর সে আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করল। তার কথায়, ‘বাংলাদেশ গরম দেশ, সুইডেন ঠান্ডা দেশ, ধরে নিয়ো রাজনীতিও সেভাবে গড়ে উঠেছে। এখন চলো, একটু হেঁটে আসি।’ আমি তো তার কথা শুনে অবাক!

লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ