দিনের বেলায় গৃহকর্মী সেজে স্ত্রী দরজায় তালা মারা বিভিন্ন বাসা-বাড়ির তথ্য সংগ্রহ করেন। আর সেই তথ্য পেয়ে দলবল নিয়ে রাতের বেলায় চুরি করতে যান স্বামী। গতকাল শুক্রবার বায়েজিদ থানা-পুলিশ এক প্রবাসীর বাড়িতে চুরির ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর চক্রটির এমন কৌশলের তথ্য জানিয়েছে।
এ সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ১৩ ভরি স্বর্ণ ও ৪৬ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা (রিয়েল) উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন সাইফুদ্দিন (৩২), তাঁর স্ত্রী রুমা আকতার (৩৮), সাইফুল ইসলাম (২২) ও মো. আলম (২৪)।
পুলিশ জানায়, এদের মধ্যে সাইফুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী ওই চক্রটির অন্যতম সদস্য। তাঁদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার মাইজদি এলাকায়। অন্যদের মধ্যে সাইফুল নগরীর বায়েজিদ ও আলম চন্দনাইশ উপজেলার বাসিন্দা।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। বাসা-বাড়ি বন্ধ রেখে যাঁরা বেড়াতে বা অন্য কাজে বাইরে থাকেন, সেসব বাসা-বাড়ি শনাক্ত করেন চক্রটির মহিলা সদস্য রুমা। গৃহকর্মী সেজে তিনি এসব তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে এসব তাঁর স্বামীকে জানান। চক্রটির অন্য সদস্যরা মিলে পরে টার্গেট করা বাসায় চুরি করে। চুরি করে পাওয়া স্বর্ণালংকারসহ দামি মালামাল আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে পাওয়া বলে নিজের কাছে রাখেন রুমা। পরে সুযোগ বুঝে বিক্রি করে দিতেন তিনি।
পুলিশ জানায়, বায়েজিদের আতুরার ডিপো এলাকায় এক প্রবাসীর বাড়িতে চুরির ঘটনায় গত ২ জানুয়ারি মামলা হয়। ওই বাড়ির লোকজন গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে চার দিনের জন্য বাইরে যান। এরই মধ্যে কোনো এক সময় চুরির হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ সময় সেখান থেকে স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রা চুরি হয়।
এ মামলায় প্রথমে সাইফুল ইসলামকে আতুরার ডিপো থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অন্যদের নাম পাওয়া যায়। গত বৃহস্পতিবার সাইফুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীকে নোয়াখালী থেকে ও আলমকে বায়েজিদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৪৬ হাজার টাকার সৌদি রিয়াল মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
ওসি কামরুজ্জামান জানান, আসামি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি ও বায়েজিদ থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলা অস্ত্র আইনে।