কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে গত দুই মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ২২৫টি অভিযান চালিয়ে ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে ৩৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। মামলা দায়ের করা হয়েছে ৬২টি। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই তরুণ ও নারী বলে জানা গেছে।
জাতীয় মহিলা সংস্থা কুমিল্লা জেলা শাখার চেয়ারম্যান পাপড়ি বসু জানান, নারীদের বিভিন্নভাবে প্ররোচনা দিয়ে একটি চক্র মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত করছে। এই চক্রকে খুঁজে বের করতে হবে।
পাপড়ি বসু আরও জানান, কারাগারে গ্রেপ্তার থাকা অধিকাংশ নারীই মাদক মামলার আসামি। তাঁদের অনেকে ১০ থেকে ১২ বার জেল খেটেছেন। তিনি বলেন, যেহেতু এটি একটি সামাজিক ব্যাধি, তাই বিভিন্ন দপ্তর, এনজিও সামাজিক সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কুমিল্লা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে ১১৫টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মাদকদ্রব্য উদ্ধার, আসামি গ্রেপ্তারে ৩২টি মামলা করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩৪ জনকে। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয় ৪ হাজার ৫৮৭টি ইয়াবা, সাড়ে ২৪ কেজি গাঁজা, নেশাজাতীয় ৭ হাজার ২২০টি বড়ি, ৬০ লিটার চোলাই মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১১০টি অভিযানে ৩০ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ৩৬ জনকে। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৭২টি ইয়াবা, সাড়ে ১৫ কেজি গাঁজা, ১১ বোতল বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য।
এদিকে গতকাল সোমবারও কুমিল্লা নগরীতে গাঁজা সেবন করায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নগরীর ধর্মপুর শাসনগাছাসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন দেবিদ্বারের শ্যামল চন্দ্র শীল (৩৫), নোয়াখালীর মো. মাহিন উদ্দিন (৪০), নেত্রকোনার মিলন (৩৫) ও নগরীর মো. সোহেল (৪৫)।
তাঁদের গ্রেপ্তারের পর জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমি আক্তার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন। অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান, উপপরিদর্শক রূপন কান্তি পালসহ অন্যান্য সদস্য অংশ নেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করি। মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদকের কুফল নিয়ে জনসচেতনতা ও চিকিৎসা। আমরা বিভিন্ন হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনবহুল স্থানে সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণসহ মাদকসেবীদের সুস্থতার জন্য চিকিৎসা কার্যক্রমে গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’