যশোর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থীকে এক হাজার টাকা করে শিশু ভাতা (কিডস অ্যালাউন্স) দেওয়া হবে। দুই বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় এর কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে করা তালিকা অনুযায়ী জেলার ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৪২ শিশু এই অ্যালাউন্স পাবে। এ ছাড়া নতুন করে ২০২১-২২ অর্থবছরে হালনাগাদ তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী গত দুই বছরে প্রাথমিক শিক্ষায় যুক্ত হওয়া শিশু ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও পাবে কিড অ্যালাউন্স। সব মিলিয়ে প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী এ ভাতা পাবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নানা কারণে দুই বছর কিডস অ্যালাউন্স দিতে পারেনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর। ২০১৯-২০ অর্থবছরের তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের বাবা বা মায়ের মোবাইল ব্যাংকিংয় হিসাবে টাকা পাবে। সে সময় যারা চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ছিল, বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এসব শিক্ষার্থীরাও পাবে ভাতার টাকা।
জানা গেছে, সে সময়ে কিডস অ্যালাউন্স দেওয়ার জন্য যে তালিকা করা হয়েছিল, সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৪২ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৩ হাজার ৩৩৩, অভয়নগরে ১৬ হাজার ৫৬৫, বাঘারপাড়ায় ১৭ হাজার ১০১, ঝিকরগাছায় ২৮ হাজার ৪৯৪, চৌগাছায় ২১ হাজার ৭১৬, শার্শায় ২৭ হাজার ১৮৬, মনিরামপুরে ৩২ হাজার ১১১ ও কেশবপুরে ২১ হাজার ১৩৫ শিশু ছিল।
সূত্র আরও জানিয়েছে, বিরতির পর আবারও শিশু ভাতা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় নতুন দুই বছরে প্রাথমিক শিক্ষায় যুক্ত হওয়া শিশু ও প্রথম শ্রেণির নতুন শিক্ষার্থীদের তালিকা সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেগুলো হালনাগাদ করা হচ্ছে। উপজেলা থেকে হালনাগাদ তথ্য পাওয়ার পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় চূড়ান্ত করবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সাল থেকে কিডস অ্যালাউন্স দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে কিডস অ্যালাউন্স ও উপবৃত্তির অর্থ ছাড় করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়ে মাধ্যমিকে পা রেখেছে। দীর্ঘ দুই বছর পরে আবারও কিডস অ্যালাউন্স বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় বরাদ্দের অর্থ ছাড় করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কিডস অ্যালাউন্সের টাকা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর মোবাইল হিসাবে পৌঁছে যাবে। আগের তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীরাও এ ভাতার টাকা পাবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা (এডিপিইও) মু. জামাল হুসাইন খান বলেন, ‘কিডস অ্যালাউন্সের টাকা পুনরায় বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০২০ সালে যারা শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তারা সবাই এ ভাতার টাকা পাবে। প্রত্যেকের বাবা বা মায়ের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাবে এ টাকা পাবে।’
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে বোঝা যাবে কবে নাগাদ সবাই অর্থ পাবে।’