একসময় গ্রামগুলোতে শীতে খেজুরের গাছ থেকে অধিক পরিমাণে রস সংগ্রহ করা হতো। খেজুরের রসের হরেক রকমের পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যেত। কিন্তু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়িঘর গাছ কাটার ফলে খেজুরগাছের সংখ্যা কমে গেছে আগৈলঝাড়াসহ পাশের উপজেলাগুলোতে। তাই এখানকার গ্রামগুলোতে দুষ্প্রাপ্য খেজুরের রস, গুড়।
কয়েক বছর আগেও শীতকালে এসব এলাকার গাছিরা খেজুরগাছের রস সংগ্রহে খুবই ব্যস্ত সময় কাটাতেন। খেজুরের রস ও পাটালি গুড় বিক্রি করে মোটামুটি ভালো আয় হতো তাঁদের। কিন্তু গত কয়েক বছরে গাছি ও খেজুরগাছ—দুটোর সংখ্যাই কমেছে আশঙ্কাজনক হারে।
স্থানীয় আব্দুর রহমান জানান, উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় এখনো পর্যাপ্ত খেজুরগাছ থাকলেও সঠিকভাবে তা পরিচর্যা না করা, নতুন করে গাছের চারা রোপণ না করা এবং গাছ কাটার পদ্ধতিগত ভুলের কারণে প্রতিবছর অনেক খেজুরগাছ মরে যাচ্ছে। এ ছাড়া একশ্রেণির অসাধু ইটভাটার ব্যবসায়ীরা জ্বালানি হিসেবে খেজুরগাছ ব্যবহার করায় আরও কমছে খেজুরগাছের সংখ্যা।
গৈলা গ্রামের জহিরুল হাওলাদার বলেন, গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও বাটালি গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই যেন অর্ধভোজন হয়ে যেতো। খেজুর রসের পায়েস, রসে ভেজা পিঠাসহ বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের জুড়িই ছিল না।
শখের বশে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহকারী গাছি মাসুম মোল্লা বলেন, আগের মতো খেজুরগাছ না থাকায় এখন আর সেই রমরমা অবস্থা নেই। ফলে শীতকাল আসলেই অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা গ্রামীণ জনপদের খেজুর গাছের কদর বেড়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ খেজুর রসের উৎপাদন বাড়াতে হলে টিকিয়ে রাখতে হবে খেজুর গাছের অস্তিত্ব। আর সে জন্য যথাযথ ভাবে পরিবেশ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ইটভাটাসহ যেকোনো বৃক্ষনিধনকারীর থেকে খেজুর গাছ রক্ষা করতে হবে।