ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন (৭৪)। পড়াশোনা করেছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে কৃষি কাজ করছেন। তবে কৃষি কাজ করেই সফল তিনি। বৃদ্ধ বয়সেও তিনি নিজের জমিতে একের পর এক ফসল আবাদ করে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমেই ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে বলে দাবি তাঁর। নিজের ছয় সন্তানকেই কৃষি কাজ শিখিয়েছেন তিনি। কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে তিনি নিজের ৫০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ ও রসুন আবাদ করেছেন। এ ছাড়া ২ একর জমিতে বাদাম, মরিচ, মিষ্টি আলু, টমেটো, শিম, মুগডাল, ফেলনডাল, সরিষার চাষ করেছেন। জমিতে ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভালোভাবেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।
৫০ বছরের কৃষির অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে ঝড় জলোচ্ছ্বাসের কারণে ফসল নষ্ট হলেও কখনই হাল ছাড়িনি। নতুন উদ্যমে নতুন করে ফসল আবাদ করেছি। ভোলার মাটি ও আবহাওয়া কৃষির জন্য বেশ উপযোগী।
জামাল উদ্দিন জানান, তাঁর জমি কখনই অনাবাদি থাকেনি। সারা বছরই তিনি কোনো না কোনো ফসল উৎপাদন করেছেন। তিনি বলেন, কৃষি কাজ করে ঠিকমতো সংসার চলছে। সন্তানদের ভরণ-পোষণ চালিয়ে যাচ্ছি। সংসারের ব্যয় ছাড়াও প্রতি মৌসুমে ৫০ হাজার জমা থাকে।
সাত সন্তানের জনক জামাল উদ্দিন। বর্তমানে স্ত্রী ছেলে ও পুত্র বধূ নিয়ে তার চারজনের সংসার। বাবা-ছেলের কৃষির আয় দিয়েই চলছে ছোট্ট সংসারটি। কৃষি কাজ করে জমানো টাকা থেকে তিনি এক লাখ টাকা খরচ করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দেড় লাখ টাকা খরচ করে ধুমধাম করে ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন। এতে তিনি খুব ভালো আছেন। কৃষি কাজ করলে নিজের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন হবে বলে মনে করেন জামাল উদ্দিন।
লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, জামাল উদ্দিন একজন ভালো চাষি। জামালের মতো আমার ইউনিয়নে আরও অনেক সফল চাষি আছে। সরকারি যেকোনো প্রণোদনা আসলে তাদের সে প্রণোদনা দেওয়া হয়।