মেহেরপুরে গত কয়েকে দিন ধরে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। শনাক্তের হার প্রায় ৫৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিজেন টেস্টের জন্য ৩৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও মাস্ক না পরায় করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বলছে, জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা এখন ৬১ জন। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৪০, গাংনীতে ১০ ও মুজিবনগর উপজেলায় ১১ জন রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪ জন। গত তিন দিনে ৪১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৬২ জন, দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করেছেন ৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৫ জন এবং বুস্টার ডোজ সম্পন্ন করেছেন ৫ হাজার ১৩৩ জন।
এদিকে গতকাল বুধবার সিভিল সার্জন ডা. জাওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী ও তাঁর কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. হুমাইরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জানা গেছে, দুজনেই বুস্টার ডোজ নিয়েছিলেন। তাঁরা বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, যাঁরা টিকা নিয়েছেন এবার তাঁরাও করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে যাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, মাস্ক পরছেন না, পরলেও নাকের নিচে পরেন। হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না মানুষ। ফলে দিন দিন আক্রান্তের হার বাড়ছে।
অলোক কুমার বলেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি চারজনের মধ্যে তিনজনই করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। তাঁরা ডায়াবেটিকসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। তবে তাঁদের অবস্থা এখনো ভালো। আর একজন টিকাই নেননি। দেখা গেছে, যাঁরা ডাবল ও বুস্টার ডোজের টিকা নিয়েছেন তাঁরা আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে কম। তবে অনেকেই উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা করতে হাসপাতালে আসছেন না। ফলে তাঁদের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৫০ শয্যা প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়াও ৫টি আইসিইউ ও ৫টি এইসডিইউ বেড রয়েছে। মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের।
জেলা প্রশাসক মুনছুর আলম খান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছেন। তাঁদের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। সঙ্গে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। এমনকি স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তাদের জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে তিন উপজেলায় করোনা সতর্ক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।