কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ সাম্প্রতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বিক্ষোভ করেছিলেন প্রবাসীরা। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫৪ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনেছে ইউএই সরকার। পাশাপাশি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাংলাদেশিদের ভিসাসুবিধা বন্ধ করল দেশটি।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০ জুলাই প্রবাসী বাংলাদেশিরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। এরপর ৫৪ থেকে ৫৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিচারের পর এই প্রবাসীদের মধ্যে কারও ১০ বছর, কারও ১১ বছর এমনকি কারও কারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশিদের ভিসাসুবিধাও বন্ধ করেছে দেশটি।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, বাংলাদেশিদের জন্য ইউএই সরকারের ভিসা বন্ধের বিষয়টি মন্ত্রণালয় অবগত হয়েছে। এরই মধ্যে ইউএইতে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
যেসব দেশ থেকে রেমিট্যান্স বেশি আসে, সেই দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত অন্যতম। তবে ২০১২ সালে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দেশটি। এরপর অনেকেই ভ্রমণ ভিসায় সেখানে গিয়ে কাজ করছিলেন। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর দেশটিতে গিয়েছেন ২৬ হাজার ১৯২ জন। গত বছর গিয়েছিলেন ৯৬ হাজার ৪২২ জন এবং ২০২২ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৭৭৫ জন। ভিসাসুবিধা বন্ধ হওয়ায় সেই সুযোগও থাকল না।
যদিও সম্প্রতি ইউএই নতুন করে ১১টি ক্যাটাগরিতে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদার কথা জানায়। প্রথম দফায় ডেলিভারি কাজে ৩ হাজার কর্মী নেবে বলে ঘোষণা দেয় দেশটি। এর মধ্যে ৪০০ ট্যাক্সি ও ৫০০ মোটরসাইকেলচালক নেওয়ার কথা। এর মধ্যে ৪০০ কর্মী দেশটিতে চলেও গেছেন। আরও ৫০০ কর্মী যাওয়ার অপেক্ষায়। তবে হঠাৎ করে ভিসা বন্ধের ঘোষণায় পুরো প্রক্রিয়াটিই হুমকির মুখে পড়ল।