ভোলার লালমোহন উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ের মাটি ভেকু দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। রাতেও চলছে মাটি কাটার কাজ। মাসের পর মাস উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের বেতুয়া স্লুইসগেটের কামারের খাল এলাকার নদীর পাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে। এতে হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, সরকারি আবাসন ও আশপাশের ঘরবাড়ি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সরকারি আবাসনের বাসিন্দা জানান, চরফ্যাশনের জনতা ব্রিকস নামের একটি ইটভাটার জন্য নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মো. ছালাউদ্দিন। নদীর পাড়ের মাটি কাটা বন্ধ না হলে যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বেড়িবাঁধসহ বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।
এ ব্যাপারে জনতা ব্রিকসের মালিক মো. মামুন বলেন, ‘ওই সব জমি কিনে সেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে।’ তবে নদীর পাড়ের জমি থেকে মাটি কাটা কতটুকু যৌক্তিক, সে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে তাঁর সঙ্গে দেখা করার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
নদীর পাড়ের জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে সহযোগী ছালাউদ্দিন বলেন, ‘ভাঙা রাস্তা মেরামতের জন্য ইট দেওয়ায় তাঁকে সহযোগিতা করছি।’
প্রায় দুই বছর আগে একই এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার অপরাধে ছালাউদ্দিনকে জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জরিমানার পর কিছুদিন বন্ধ রাখলেও এখন আবার পুরোদমে মাটি কাটা হচ্ছে।
এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দারা জানান, যেভাবে নদীর পাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে, যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ এলাকার ঘরবাড়ি ও সরকারি আবাসন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ছালাউদ্দিনের ভয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারছেন না। তাঁর অনেক ক্ষমতা। কেউ প্রতিবাদ করলে রাতের আঁধারে তাঁদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হতে পারে। ছালাউদ্দিনকে আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর পাড়ের জমি থেকে কেউ মাটি কাটতে পারবেন না। আর কেউ যদি এমনটা করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লালমোহন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বেড়িবাঁধের বাইরে নদীর পাড়ে কোনো অবস্থাতেই কেউ মাটি কাটতে পারবেন না। নদীর পাড়ের জমি থেকে মাটি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’