বাগেরহাটের কচুয়ায় এক কৃষকের তিন হাজার ফলন্ত টমেটো গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে কচুয়া উপজেলার বিশারখোলা মাঠে কৃষক দাউদ মৃধার ক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে।
বিপুল পরিমাণ টমেটো গাছ কেটে ফেলায় সাত থেকে আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কৃষক দাউদ মৃধা। গেল বছরও দাউদ মৃধা ও তার ভাইয়ের টমেটো গাছ কেটে ফেলেছিল দুর্বৃত্তরা। শুধু দাউদ মৃধা ও তার ভাই নয়, গেল দুই বছর ধরে বিশারখোলা ও গজালিয়া এলাকার অন্তত বিশজন কৃষকের টমেটো গাছ কেটে ফেলে হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দাউদ মৃধা বলেন, ৭৪ শতক জমি লিজ নিয়ে খেয়ে না খেয়ে অনেকে কষ্ট করে তিন হাজার গাছ লাগিয়েছি। জমি প্রস্তুত, ঘুরি দেওয়া, রোপণ ও সার প্রদানে দুই লাখ টাকার ওপরে ব্যয় হয়েছে। ১৫ দিন পরেই এ সব গাছ থেকে টমেটো বিক্রি করতে পারতাম। তিন হাজার গাছে অন্তত আট লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারতাম। আমাকে একদম শেষ করে দিয়ে গেল।
কে বা কারা কেটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে দাউদ মৃধা বলেন, এই টমেটোই আমার সব। রাত জেগে পাহারা দেই। শীত লাগার কারণে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে বাড়িতে যাই। বুধবার সকালে এসে দেখি সব গাছ কাটা। কে কাটছে জানি না।
শ্রমিক মো. রুহুল আমিন বলেন, একটি টমেটো গাছে ফল আসা পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে যায়। যখন ফল বিক্রির সময় আসল তখনই এই কাজ করল।
স্থানীয় মোস্তফা দরানী ও আলী আকবর দরানী জানান, শুধু এবার নয়, দুই বছর ধরে গজালিয়া ও বিশারখোলা এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিভিন্ন লোকের ফলন্ত গাছ কেটে নষ্ট করছে। গেল বছরও দাউদ ও তার ভাই ওয়াদুদ মৃধাসহ অন্তত ২০ জনের টমেটো গাছ কেটেছে চক্রটি।
ওয়াদুদ মৃধার স্ত্রী সুখি খানম বলেন, রাত আড়াইটা পর্যন্ত আমার ভাশুর (দাউদ মৃধা) টমেটো খেতে ছিল। তারপরে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এত অল্প সময়ে একজন বা দুজন মানুষের পক্ষে এত বেশি গাছ কাটা সম্ভব নয়। যারা কেটেছে তারা একসঙ্গে অন্তত ৫-৭ জন এসেছিল। গাছ কাটার সময়, আমার ভাশুরকে পেলে মেরে ফেলতেও পারত। যেকোনো মূল্যে এই চক্রটিকে খুঁজে বের করার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, একজন কৃষকের টমেটো গাছ কাটার খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।