পয়সারহাট-ত্রিমুখী নদীর উপকূল এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ছোট বড় অনেক শুঁটকি পল্লি। এ অঞ্চলের সু-স্বাদু মিঠা পানির নানা প্রজাতির মাছের শুঁটকি সারা দেশে যায়।
বেশি লাভের আশায় আশ্বিন মাসের প্রথম থেকে ৫-৬ মাস শুঁটকি তৈরির কাজ করে অনেক জেলে। তবে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে শুঁটকি পল্লির শ্রমিকদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
প্রায় ১৩ বছর আগে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গড়ে উঠে পয়সারহাট-রাজাপুর-ত্রিমুখী-রাজিহারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের শুঁটকি পাড়া। শুঁটকি তৈরিতে ব্যবহার করা মাছের মধ্যে পুঁটি, শৈল, ট্যাংরা, খলশে, পাবদা, কই, শিং, মাগুর, মেনি, ফলি উল্লেখযোগ্য।
শুঁটকি ব্যবসায়ী অশোক রায়, দীলিপ অধিকারী, নিশিত, নরেশ তালুকদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজার থেকে ১ মণ কাঁচা মাছ কিনে শুকালে ১৫-২০ কেজি শুঁটকি পাওয়া যায়। সে হিসেবে তিন মণ কাঁচা পুটি মাছ শুকালে এক-দেড় মণ শুঁটকি মাছ পাওয়া যায়। গত বছর ১ মণ পুঁটি শুঁটকি ৬-৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। এ বছর সে শুঁটকি ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ কাঁচা মাছ তাদের আগের চেয়ে অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
ওই পল্লির শুঁটকি তৈরির কাজে নিয়োজিত রাজাপুর গ্রামের সুলেখা অধিকারী, হালিমন বেগম, পপি অধিকারী জানান, বছরে ৫-৬ মাস এ কাজে নিয়োজিত থাকলেও বাকি ছয় মাস অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়। জিনিসপত্রের দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি হলেও মজুরি আগের মতোই আছে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে লেখাপড়া করছে। মাছ কেটে যা আয় হয় তা দিয়ে বহু কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে শুকনো মৌসুমের শুরুতে মাছ বেশি পাওয়া গেলেও মাঝামাঝি সময়ে বিলে মাছ কম থাকায় দুর্দশা বেড়ে যায়।
শুঁটকি পল্লির ব্যবসায়ী সদানন্দ হালদার জানান, সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণ না পাওয়ায় প্রতি বছরই ঋণগ্রন্থ হয়ে পড়তে হচ্ছে। শুঁটকির সঙ্গে জড়িত মৎস্যজীবীরা সাহায্যের পরিবর্তে সহজ শর্তে ঋণ আশা করছে সরকারের কাছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, শুঁটকি পল্লির ব্যবসায়ীরা সরকারিভাবে যেন সহজ শর্তে ঋণ পান সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব।