হারিয়ে যাওয়ার ২২ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন তানজিমা আক্তার নামের এক নারী। হারিয়ে যাওয়ার সময় তানজিমার বয়স ছিল ছয় বছর। বর্তমানে তিনি ২৮ বছরের যুবতী। ঘটনাটি ঘটেছে ঈশ্বরগঞ্জের মগটুলা ইউনিয়নের তরফপাছাইল গ্রামে। তানজিমা ওই গ্রামের নূরুল হুদার মেয়ে।
তানজিমা আক্তার বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে বাবা–মায়ের সঙ্গে রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ তাঁকে দেখতে ভিড় করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার বাবা–মাকে খুঁজে পান তানজিমা।
স্বজনেরা জানান, ১৯৯৯ সালে নানি জাহানারা খাতুনের সঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে ঢাকার মহাখালীর কড়াইলে নানার বাড়িতে বেড়াতে যান তানজিমা। সেখান থেকে হারিয়ে যান তিনি। পরে শান্তিবাগ এলাকার গোকরান মিয়া নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা তানজিমাকে পেয়ে লালন-পালন করেন। বিয়ের ব্যবস্থাও করেন তিনি। তানজিমা বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে তিন সন্তান নিয়ে ঢাকার বনশ্রী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
তানজিমা জানান, বাবা–মাকে খুঁজে পেতে একটি এফএম রেডিও চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে তাদের ‘আপন ঠিকানা’ নামক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ অনুষ্ঠান দেখে তানজিমাকে চিনতে পারেন বাবা–মা। এরপর ঢাকার ভাড়া বাসায় গিয়ে হাজির হন বাবা-মা ও ভাই। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।
তানজিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার জীবনের স্বপ্ন ছিল জন্মদাতা বাবা ও গর্ভধারিণী মাকে দেখার। আমাকে যিনি লালন-পালন করেছেন সেই ব্যাংক কর্মকর্তা আজ বেঁচে নেই। তাঁরা আমাকে সন্তানের মতো লালন পালন করেছেন। তাঁদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।’
প্রতিবেশী মো. ঈমান আলী বলেন, ‘তানজিমা হারিয়ে যাওয়ার পর তাঁর বাবাকে নিয়ে আমি ঢাকা গিয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হই।’
বাবা নূরুল হুদা বলেন, মেয়েকে হারিয়ে পাগলের মতো খোঁজাখুঁজি করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন পর হলেও মেয়েকে খুঁজে পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।