এই সেপ্টেম্বরে পিট সাম্প্রাসের ১৪তম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের ২০ বছর পূর্তি হবে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আন্দ্রে আগাসিকে হারিয়ে সেবার নিজের পঞ্চম ইউএস ওপেন শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। সেটি ছিল তাঁর শেষ শিরোপা, এর মধ্যে দিয়ে তিনি বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন। সে সময় তাঁর অর্জনকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উচ্চতর মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল।
তবে পরে সাম্প্রাসের রেকর্ড শুধু ভাঙেইনি; রজার ফেদেরার (২০), রাফায়েল নাদাল (২২) ও নোভাক জোকোভিচ (২১) এই রেকর্ডকে রীতিমতো সমাধিস্থ করে দিয়েছেন। একই সময়ে খেলতে নেমে এই তিনজন যেসব কীর্তি গড়েছেন, তুলনারহিত।
এর মাঝেই আরেকটি গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা সামনে রেখে সোমবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ইউএস ওপেন। টিকা না নেওয়ায় বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লামে জোকোভিচের খেলা প্রায়ই অনিশ্চিত। ৪১ বছর বয়সী ফেদেরার লড়ছেন বয়স ও চোটের সঙ্গে। তাঁকেও ফ্ল্যাশিং মিডো মাতাতে দেখা যাবে না। এই ত্রয়ীর মাঝে শুধু নাদালকেই টুর্নামেন্টে দেখা যাবে। তবে জোকোভিচের না থাকা দর্শকদের জন্যই সবচেয়ে বেশি হতাশার বিষয়। এতে তাদের উপভোগ করা হবে না আরেকটি নাদাল-জোকোভিচ দ্বৈরথও। এই তিনের অমরত্ব ইতিমধ্যে নিশ্চিত হলেও সময়ের দৈত্য খুব শিগগির এসে গ্রাস করবে তাঁদের ক্যারিয়ারকে। বাকি দুজন না থাকায় এবারের ইউএস ওপেনে সবার চোখ থাকবে নাদালের ওপর।
এর মাঝে আসছে সর্বকালের সেরার প্রসঙ্গও। টেনিসে সেরার বিতর্কে ইতি টানতে এককভাবে গ্র্যান্ড স্লাম সংখ্যাকে ব্যবহার করা তুলনামূলক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। ষাটের দশকের আগপর্যন্ত এককভাবে গুরুত্বপূর্ণ না হলেও ডেভিস কাপকে সমতুল্য বিবেচনা করা হতো। বর্তমান সময়ে ডেভিস কাপের নামও নেওয়া হয় কদাচিৎ। ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত পেশাদারদের স্লামে খেলা থেকে বাদ দেওয়া হতো; যে কারণে রড লেভার নিজের সেরা সময়ে পাঁচ বছর খেলতে পারেননি। এই অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ার শেষ করেছেন ১১ গ্র্যান্ড স্লাম নিয়ে। হারিয়ে যাওয়া সেই পাঁচ বছর খেলতে পারলে লেভার কোথায় গিয়ে থামতেন, সেটিও বিবেচনায় নেওয়ার মতো।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হচ্ছে সত্তর ও আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত শীর্ষ তারকাদের অনেকেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে যেতেন না। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি হচ্ছে, বিয়ন বোর্গ এই টুর্নামেন্ট খেলেছেন মাত্র ১ বার। ১১টি গ্র্যান্ড স্লাম জেতা বোর্গ সবকটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেললে কোথায় গিয়ে শেষ করতেন, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
তবে সেরেনার নাম বাদ দিয়ে এই আলাপ শেষ করার সুযোগ নেই। শুরুর দিকে তাঁর বোন ভেনাস উইলিয়ামস ও জাস্টিন হেনিনকে বাদ দিলে আর কেউ সেরেনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি। তাই সবচেয়ে ভালো হয় অর্থহীন এই তুলনা বাদ দিয়ে সময়ের দৈত্যের পেটে ঢুকতে থাকা এই মহাতারকাদের শেষ সময়টা মন ভরে উপভোগ করা।