জনপ্রিয় সিটকম সিরিজ ‘ফ্রেন্ডস’খ্যাত অভিনেতা ম্যাথিউ পেরি মারা যান গত বছরের ২৮ অক্টোবর। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে নানা মত সামনে এসেছিল। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উঠে এসেছিল, কেটামাইন নামক ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করার ফলে বাথটাবের পানিতে ডুবে মারা যান ম্যাথিউ পেরি।
পেরির মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর এখন জানা যাচ্ছে, ওষুধটি অভিনেতাকে ইনজেক্ট করার পাশাপাশি মদের মধ্যেও মিশিয়ে দিয়েছিল তাঁর সহকারী। পেরির মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে আছেন অভিনেতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কেনেথ ইওয়ামাসা, ম্যাথিউ পেরির সহকারী ও চিকিৎসক।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ জানিয়েছে, ম্যাথিউ পেরিকে কেটামাইন ড্রাগ সরবরাহ করার জন্য এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনের সবাই একটি অপরাধমূলক নেটওয়ার্কের অংশ, যাঁরা পেরিকে মাদক সরবরাহ করতেন। তাঁদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন, যিনি ‘কেটামাইন কুইন’ নামে পরিচিত। ইউএস ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক বলেন, ‘ম্যাথিউ পেরির মৃত্যুতে প্রত্যেক অভিযুক্ত যার যার মতো করে ভূমিকা রেখেছে। কেউ তাঁকে ভুলভাবে কেটামাইন প্রেসক্রাইব করেছে, কেউ তাঁর কাছে বিক্রি করেছে এবং কেউ তাঁর শরীরে এটা ইনজেক্ট করেছে।’
আদালতে দাখিল করা নথি অনুসারে, পেরির চিকিৎসক সালভাদরের বিরুদ্ধে সাতবার চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া কেটামাইন বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। পেরির বন্ধু ইওয়ামাসা স্বীকার করেছেন, অভিনেতার মৃত্যুর দিন কয়েকবার ইনজেকশনের মাধ্যমে এই ওষুধ পেরির শরীরে দিয়েছিলেন তিনি। সালভাদরই ইওয়ামাসাকে শিখিয়েছিলেন কীভাবে কেটামাইন ইনজেক্ট করতে হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আরেক অভিযুক্ত এরিক ফ্লেমিং স্বীকার করেছেন, তিনি ৫০টি ড্রাগ কিনে ইওয়ামাসাকে দিয়েছিলেন।
অভিনেতা ম্যাথিউ পেরির শরীরে কেটামাইন অতিরিক্ত মাত্রায় পাওয়া গিয়েছিল। পেরি দীর্ঘদিন ধরে মাদকে আসক্ত ছিলেন। একাধিকবার নিরাময়কেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। জনসমক্ষে নিজের এই লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছিলেন তারকা। পরে তিনি ম্যালিবুতে তৈরি করেন ‘পেরি হাউস’, যা মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি ও সুস্থ জীবনে ফিরতে সাহায্য করত তরুণ প্রজন্মকে। পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, অভিযুক্ত পাঁচজন পেরির মাদকাসক্তির সুযোগ নিয়েছিলেন।
১৯৮৭ সালে ‘বয়েজ উইল বি বয়েজ’-এ প্রথম অভিনয় করার সুযোগ পান ম্যাথিউ পেরি। তবে তাঁর অভিনয়ের জীবনে মাইলফলক ছিল ‘ফ্রেন্ডস’। সিরিজটি এতই জনপ্রিয়তা পায় যে, টানা ১০ বছর ধরে তা চলে। সবার কাছে ম্যাথিউ পরিচিত হয়ে ওঠেন তাঁর বিখ্যাত চরিত্র ‘চ্যান্ডলার বিং’ হিসেবে।