জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী রিফাত হাসান রাব্বি (১০)। পায়ের নিচের অংশ চিকন ও বাঁকা হওয়ায় হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে হতো তাকে। তার বাবা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের করিমনচালক শাহাজাহান মল্লিকের সামর্থ্য ছিল না একটা হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার। তবে রিফাতের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থাকায় বাবা-মা কোলে করেই তাকে স্কুলে নিয়ে যেতো।
সে কেশবপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিন স্কুলে আনা-নেওয়া তার বাবা-মায়ের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। সম্প্রতি একটি হুইল চেয়ারের অভাবে ওই স্কুলছাত্রের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। বিষয়টি তুলে ধরে কেশবপুর ফেসবুক গ্রুপে ইনামুল হাসান নাইম নামে এক সদস্য পোস্ট দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে আসে।
গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন পরিষদ চত্বরে স্কুলছাত্র রিফাত হাসান রাব্বিকে একটি হুইল চেয়ার দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিফাতের বাবা শাহাজাহান মল্লিক, ফেসবুকে পোস্টদাতা ইনামুল হাসান নাইম প্রমুখ।
হুইল চেয়ার পেয়ে প্রতিবন্ধী রিফাত হাসান বলে, ‘হুইল চেয়ার পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। আমি এটি চালিয়ে স্কুলে যেতে পারব। আর আমার বাবা-মাকে কষ্ট করে কোলে করে নিয়ে যেতে হবে না। আমি পড়াশোনা করে বড় হয়ে এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াব।’
ইনামুল হাসান নাইম বলেন, ‘প্রতিবন্ধী রিফাত হাসানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা শুনে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিই। ইউএনও স্যারের নজরে আসলে এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে একটি হুইল চেয়ার দিয়েছে। এখন আর রিফাতকে কোলে উঠে স্কুলে যেতে হবে না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও রিফাতের পড়ালেখার প্রতি অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকার বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলে যাওয়া-আসা ও চলাফেরা করার জন্য একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। তার পড়ালেখার জন্য আর্থ সহায়তা লাগলেও সেটি দেওয়া হবে।’