সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার নগরঘাটা ইউনিয়নের হরিণখোলা এলাকায় প্রায় ৩২টি মুন্ডা পরিবারের বসবাস। তাঁদের নিজেদের কোনো জায়গা-জমি নেই। ফলে তাঁরা স্থানীয়দের পরিত্যক্ত বাড়িতে থাকেন।
মুন্ডারা স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটায় ও অন্যর জমিতে কৃষিকাজ করেন। তবে বছরের বেশির ভাগ সময়ই তাঁদের বেকার বসে থাকতে হয়। করোনাভাইরাসের পর থেকে কর্মক্ষেত্র আরও ছোট হয়ে এসেছে।
জানা গেছে, মুন্ডারা মূলত দক্ষিণ এশিয়ার একটি আদিবাসী। ভারতের ঝাড়খণ্ড, নাগপুর, মধ্যপ্রদেশ, ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গে এদের বসবাস। তবে দেশের খুলনার কয়রা, ডুমুরিয়া, সাতক্ষীরার দেবহাটা ও তালার বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের বসবাস রয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনেও এদের আদি বসতির চিহ্ন মিলে।
হিন্দু রীতিনীতিতে চলে তাঁদের সামাজিক জীবন প্রথা। তাঁদের নিজস্ব মুন্ডারি ভাষাও রয়েছে। তবে বর্তমানে তাঁদের অনেকই বাংলা ভাষায় কথা বলেন। তাঁদের ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখাও করছে পাটকেলঘাটার বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আশান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
মুন্ডাদের দুর্দশার কথা জানাতে গিয়ে স্থানীয় রনিক ও ও বিমল মুন্ডা বলেন, ‘বছরের অর্ধেক সময় ঘরে বসে দিন পার করতে হয় আমাদের। এলাকায় আমরা সব সময় কাজ পাই না। ফলে অনেক কষ্টে চলে আমাদের জীবন-জীবিকা।’
তাঁরা আরও বলেন, ‘এলাকায় কাজ না পেলে অন্য এলাকায় যাই। তারপরেও বছরের অর্ধেক সময় বসে থাকতে হয়। তখন বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়। আর সেই শোধ করতে বাকি বছর খেটে মরতে হয়।’
নগরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপু বলেন, ‘মুন্ডাদের কোনো নিজস্ব জায়গা নাই। তাই তাঁরা স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির জমিতে বেড়া দিয়ে থাকেন। তবে তাঁদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে।’