খাইরুল ইসলামের (৩৪) এক হাতে সরু বাঁশে ছোট-বড় পতাকা বাঁধা। অপর হাতে কাঠিতে ঝোলানো ছোট পতাকা ও বিজয় দিবস লেখা ফিতা। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এলেই জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। ছুটে বেড়ান দেশের নানা প্রান্তে। পতাকা তুলে দেন নতুন প্রজন্মের হাতে হাতে।
খাইরুল পেশায় একজন ফেরিওয়ালা। বছরের ১১ মাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করেন। শুধু ডিসেম্বরেই বিক্রি করেন জাতীয় পতাকা। এক সপ্তাহ আগে ফরিদপুর থেকে টাঙ্গাইলের সখীপুরে এসেছেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সখীপুর খান মার্কেটে কথা হয় খাইরুল ইসলামের সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করেন তিনি। এক সপ্তাহ আগে সখীপুরে এসেছেন। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন তিনি।
খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই পতাকা বিক্রি করি না। দেশকে মন থেকে ভালোবাসি বলেই রাস্তায় রাস্তায় পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াই। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি থেকেই পতাকার ফেরিওয়ালা হয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস যুদ্ধ করে আমাদের একটা দেশ উপহার দিয়েছেন। তাঁদের দেওয়া লাল-সবুজ পতাকা বুকে ধারণ করে রেখেছি এবং বিজয়ের মাসে মানুষের কাছে বিজয়ের বার্তা দিচ্ছি।’
খাইরুল আরও জানান, প্রতিটি বড় আকারের পতাকা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, মাঝারি আকারেরটা ২৫০ টাকা, ছোট আকারেরটা ৫০ থেকে ২০০ টাকা। মাথায় বাঁধার ফিতা ১৫ টাকা, আর রাবারের ফিতা ২০ টাকা, লাঠি পতাকা ১০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকার পতাকা বিক্রি করেন তিনি।
বিজয় দিবস যত কাছে আসে, বিক্রি ততই বাড়ে। প্রতি বিজয় দিবসে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকার পতাকা বিক্রি হয়ে থাকে।
খাইরুল ইসলামের কাছ থেকে পতাকা কিনেছেন মোজাম্মেল হক সজল নামের এক কলেজশিক্ষক। তিনি বলেন, ‘বিজয়ের মাস চলছে তাই ১৫০ টাকা দিয়ে একটা পতাকা কিনেছি। বাসায় দেশের পতাকা টানিয়ে রাখব বলে।’
মুদি দোকানদার ফরহাদ হোসেন জানান, আগের পতাকাটি পুরোনো হয়ে গেছে। বিজয় দিবসে তাঁদের সব দোকানেই পতাকা উত্তোলন করা হয়। তাই নতুন একটি পতাকা কিনেছেন।