রংপুরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) তপন রায়কে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিনা মূল্যের ফরমের বিপরীতে ১০০ টাকা ঘুষ নেওয়া এবং লাইসেন্সের জন্য আলাদা ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ সাময়িক বরখাস্তের এই আদেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রংপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আশিকুর জানান, দুদকের গণশুনানিতে কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর তপন রায়কে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
রংপুর টাউন হলে ২৮ মার্চ দুদক আয়োজিত গণশুনানিতে মিঠাপুকুর উপজেলার মোস্তাফিজার রহমান নামের একজন তপনের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি করাসহ বিনা মূল্যের ফরমের বিপরীতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী ব্যক্তির বরাত দিয়ে আশিকুর বলেন, মোস্তাফিজার তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠান মানহা ট্রেডিং কারখানার ‘লে আউট প্ল্যান’ অনুমোদন সংক্রান্ত সেবা নিতে ২৭ মার্চ তপনের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে লাইসেন্সের আবেদনের ফরম চাইলে ১০০ টাকার বিনিময়ে তাঁকে বিনা মূল্যের ফরম দেন। একই প্ল্যান অনুমোদনের জন্য তাঁর কাছে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন তপন।
দুদকের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হকের উপস্থিতিতে গণশুনানিতে তপন ১০০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু লাইসেন্স করে দেওয়ার নামে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ ঘটনায় দুদক কমিশনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়াসহ সেবা গ্রহীতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য তপনকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবির ঘটনায় বদলি না করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। দুদক কমিশনার শ্রম অধিদপ্তরকে তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলেন। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে দুদকে মামলা করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
এমন অবস্থায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক নাসির শ্রম পরিদর্শক তপনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশ দেন। এ ছাড়া আদেশে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর কথাও বলা হয়েছে।